১০ মেডিক্যাল কলেজে হচ্ছে ১৯ হোস্টেল

দেশের ১০টি মেডিক্যাল কলেজে আধুনিক সুবিধাসহ ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে কলেজগুলোর ৯ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, এক হাজার ৪২৮ কোটি ৭৫ লাখ ৩১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে “১০টি মেডিক্যাল কলেজ এর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর।

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত পুরো বরাদ্দ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন, সিলেট সিটি করপোরেশন, খুলনা সিটি করপোরেশন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন, বরিশাল সিটি করপোরেশন, রংপুর সিটি করপোরেশন এবং দিনাজপুর জেলার দিনাজপুর পৌরসভা এলাকায় এসব হোস্টেল ভবন নির্মিত হবে। প্রকল্পের আওতায় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ২ লাখ ৪০ হাজার ৩৬৬ বর্গমিটার ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ করা হবে। এসব ভবনের জন্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেনা হবে। এ ছাড়াও অফিস ও হোস্টেল সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়িত হবে।

সূত্র আরও জানায়, প্রকল্পটি সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আওতায় চিহ্নিত সূচকগুলোর অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং চিকিৎসাসেবার মান বাড়বে। প্রকল্পটি ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ এর ৫.৫ অনুচ্ছেদে “জাতীয় হাসপাতাল ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল সুবিধা শক্তিশালীকরণ” বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যা এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিল রয়েছে। তাছাড়া এসডিজি’র অভীষ্ট-৩ “সকল বয়সী সকল মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণ” এর সঙ্গে প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মিল রয়েছে।

প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদনের লক্ষ্যে উপস্থাপনের যুক্তি তুলে ধরে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ১০টি মেডিক্যাল কলেজে আধুনিক সুবিধা সংবলিত ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ৮ হাজার ৯০৮ জন ছাত্র-ছাত্রীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণসহ মানসম্মত চিকিৎসক তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখবে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী বিভাগ বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও আইএমইডি কর্তৃক নিবিড় তদারকি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে তদনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।

এমন অবস্থায়, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে এক হাজার চারশত আটাশ কোটি পঁচাত্তর লাখ একত্রিশ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জুন ২০২৬ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য একনেক-এর অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেনে, প্রকল্পটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। দেশের ১০টি মেডিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর আবাসন সমস্যা নিরসনে এই সব হোস্টেল ভবন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এসব হোস্টেল ভবনের মাধ্যমে ৮ হাজার ৯০৮ জন ছাত্র-ছাত্রীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণসহ মানসম্মত চিকিৎসক তৈরিতে বিশেষ অবদান রাখবে।