কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভারতের দিল্লীতে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত ডব্লিউএইচওর ৭৬তম দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে সনদপত্র তুলে দেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম খেত্রপাল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেরডর আধানম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,”এর আগে বাংলাদেশ ফাইলেরিয়া ও পোলিও নির্মূল করে সনদ পেয়েছিল। এবার বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বে প্রথম হওয়ায় এটি একটি জাতিগত প্রশংসিত অর্জন হয়েছে। এ অর্জনে দেশের স্বাস্থ্যখাতসহ আমরা সকলেই গর্বিত।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই অর্জনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ পরামর্শ ও নির্দেশনার কথা জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন,”দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কমিউনিটি ক্লিনিক এখন ভরসার জায়গা হতে পেরেছে। প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অবদান দেশের ১৪,০০০ কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিটি থেকে ঐ এলাকার প্রায় ৬,০০০ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে। ধীরে ধীরে দেশের দুর্গম এলাকাতেও প্রস্তুত করা হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক। ক্লিনিকগুলো থেকে ৩০ রকমের ওষুধ দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। এর পাশাপাশি গ্রামের মায়েদের নিরাপদ সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রেও কমিউনিটি ক্লিনিক কাজে লাগছে।”
‘এর সুফল হিসেবে গত কয়েক বছরের জড়িপে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হার প্রতি লাখে ৩২০ জন থেকে হ্রাস পেয়ে এখন ১৬৩ জন হয়েছে। একইভাবে প্রতি হাজার জীবীত শিশুর মৃত্যুহার ৬৫ জন থেকে হ্রাস পেয়ে ২৮ জনে নেমে এসেছে।:
উল্লেখ্য, ভারতের নয়া দিল্লিতে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬-তম দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সম্মেলনে। আজ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের প্রাইমারী স্বাস্থ্যসেবাসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অর্জন এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিশেষ উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি। সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, পূর্ব-তিমুর, উত্তর কোরিয়াসহ ১১টি দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ মনসুখ মান্ডাভিয়া। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ডঃ টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস এবং স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম খেত্রপাল।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শাহাদত খন্দকার, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহঃ অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিনসহ আরও অনেকে।