বান্দরবানে পাহাড়ি পল্লীগুলোতে উৎপাদিত জুমের ধান তুলতে ব্যস্তসময় পার করছেন জুম চাষিরা। পাহাড়ে পাহাড়ে উঁচুনিচু জমিতে ধান কাটছেন পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও। তবে একমাস আগে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে এবার বেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার জুমিয়ারা (পাহাড়ি কৃষক)। এ বছর জুম ধানের পাশাপাশি সাথী ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। তারপরও পাহাড়ের কৃষকদের জন্য জুমচাষই ভরসা। জুমের ফসল উঠে আসা মানে ঘরে ঘরে আনন্দ।
জুমচাষের উপযোগী পাহাড় সম্পূর্ণ প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। পাহাড়েই চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন পাহাড়িরা। এ চাষে কোনো সেচ দেওয়া লাগে না, প্রাকৃতিকভাবে রোদ-বৃষ্টি যা হয় তাতেই সোনার ফসল ফলে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টি বা অতিরিক্ত রোদ হলেও জুমের ফলন ভালো হয় না।
পরিমাণ মতো রোদ-বৃষ্টি হলেই ভালো ফসল পাওয়া যায়। বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার সাতটি উপজেলায় চলতি অর্থবছরে সাত হাজার ৯৩৩ হেক্টর জায়গায় জুমচাষ করা হয়েছে। সম্ভাব্য উৎপাদন চাল ১২ হাজার ৫৮ মেট্রিক টন এবং ধান ১৮ হাজার ৮৭ মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে দুই দশমিক ২৮ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বান্দরবান কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এমএম শাহনেয়াজ বলেন, এ বছর শুরুতে বৃষ্টিপাত কম হলেও শেষের দিকে অতিবৃষ্টিপাত হওয়ায় ঢালু জায়গা ও জুমের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। গত আগস্ট মাসে অতিবৃষ্টির কারণে সাথী ফসলেরও কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে বান্দরবান জেলায় জুমচাষিদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকার মতো হবে। চলতি বছর জুমচাষিদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদকে অবহিত করা হয়েছে।