আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল আজ

আগামী মাসে উদ্বোধন

নানা সংকটে কয়েক দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও অবশেষে খুলতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ রেলপথ চালু হলে যোগাযোগের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে এই রেলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা।

গত ১৬ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় সফলভাবে ট্র্যাক কার চালানোর পর এখন চলছে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের প্রস্তুতি। ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রেলপথটি চালু হলে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। এদিকে রেলপথ দ্রুত চালুর খবরকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে যেন আগ্রহের শেষ নেই। এলাকাবাসীর দাবি, এই রেল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যেন এলাকাবাসীকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর বলেন, রেলপথের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে যে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে, সেটি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন বয়ে আনবে। এই রেলপথ শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্তই করছে না, বরং খুলে দিচ্ছে বাণিজ্য সম্ভাবনার নতুন দুয়ার।

টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড প্রকৌশলী রিপন শেখ বলেন, আগামীকাল ২২ আগস্ট পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য সবরকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) মো. ইয়াসীন বলেন, এ প্রকল্পটি চালু করার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষসহ আমরা সবাই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। এ প্রকল্পটি চালু হলে রেলপথে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে। পাশাপাশি বাড়বে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।

বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যে সাতটি অঙ্গরাজ্য রয়েছে, তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কলকাতার যোগাযোগের জন্য প্রায় ১ হাজার ৪৫০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। এ রেলপথটি হয়ে গেলে ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় যাত্রাপথ অন্তত সাড়ে ৯০০ কিলোমিটার কমে যাবে।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের নির্মাণকাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৪১ কোটি টাকা। ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড প্রকল্পের কাজ করেছে। আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর গিয়ে মিশেছে এই রেলপথ।