গুরুদাসপুরে মাছ রপ্তানিতে এক বছরে আয় ৬০০ কোটি টাকা

গুরুদাসপুরের চাষিরা দেশ-বিদেশে মাছ রপ্তানি করে বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন। বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে চাষ করা কার্প এবং মিশ্র প্রজাতির ২০ হাজার মেট্রিক টন মাছ বিক্রি করে গত বছর এসেছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

মাছচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ, সিলভার, ব্রিগেড, গ্লাসকার্প, ব্লাককার্প জাতের মাছ চাষ করা হয়। একই সঙ্গে প্রতিটি পুকুরে নিবিড় এবং আধা নিবিড় দুই পদ্ধতিতে মিশ্র হিসেবে কই, সিং, পাবদা, গুলসা-টেংরাসহ বেশ কয়েক প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। এরমধ্যে মিশ্র প্রজাতির সুস্বাদু পাবদা, সিং, পাঙাশ মাছ ভারতে রপ্তানি করছেন চাষিরা।

বিদেশে মাছ রপ্তানি করা চাষি আব্দুস সালাম জানান, বাংলাদেশের মাছ পার্শ্ববর্তী ভারতে ব্যাপক চাহিদা জুগিয়েছে। এ কারণে তিনি নিয়মিতই পাবদা, সিং ও পাঙাশ মাছ ভারতের বাজারে বিক্রি করেন।

রুহুল আমিন মোল্লা জানান, তারা পোনা মাছ চাষ করেন না। ন্যূনতম এক কেজির ওপরে কার্প প্রজাতির মাছ ছাড়া হয়। ছয় থেকে আট মাস মেয়াদের মধ্যেই মাছগুলো ন্যূনতম আড়াই কেজি থেকে সাড়ে ১২ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। আকার ভেদে এসব মাছের পাইকারি বাজারদর ১৫০ টাকা থেকে ৫০০টা কেজি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৎস্য দপ্তর থেকে গৃহীত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০২১-২২ নাগাদ মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু বেসরকারি মাঠ জরিপে ২০২১-২২ সাল নাগাদ প্রকৃত উৎপাদন ২০ হাজার মেট্রিক টনও ছাড়িয়ে গেছে।

চলনবিল ও জলবায়ু রক্ষা কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক সাজেদুর রহমান জানান, দখল-দূষণের ফলে চলনবিলে কমেছে প্রাকৃতিক জলাধার। ফলে আশঙ্কাশজনক হারে কমেছে মিঠাপানির মাছ। তবে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়ে উঠেছে মাছ চাষের পুকুর। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে চাষের মাছ। মাছ চাষে এই অঞ্চলের চাষিরা নীরব বিপ্লব ঘটাচ্ছেন।