দেশে ৩ লাখ টাকায় শুরু কিডনি প্রতিস্থাপন

প্রতিস্থাপনের জন্য ১৪ দিনের প্যাকেজে রোগীর খরচ হবে ৩ লাখ টাকা।

পিরোজপুরের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী সুজন রায়কে নিজের কিডনি দিয়ে ভ্রাতৃত্বের দৃষ্টান্ত রাখলেন ৩১ বছর বয়সী তারই ছোট ভাই সুসেন রায়। আর এই দৃষ্টান্তের সাক্ষী হয়ে থাকলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল ও ২৫ জন চিকিৎসক। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের এই উদাহরণের মধ্য দিয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শুরু হলো কিডনি প্রতিস্থাপন।

সোমবার (১৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক রেনাল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে কমপক্ষে ২৫ জন চিকিৎসক এই ট্রান্সপ্ল্যান্ট কার্যক্রমে অংশ নেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা।

সুজন রায়ের ছেলে জনান, কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তারা সর্বপ্রথম ভারতের একটি হাসপাতালে যান। তবে সেখানে এর ব্যয় ধরা হয় ১৭ লাখ টাকা। দেশে ফিরে আসেন হতাশ হয়ে। এরপর ভাগ্যক্রমে খবর পান সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে একই প্রতিস্থাপন করা হবে ৩ লাখ টাকায়। চাচাও রাজি হয়ে যান কিডনি দিতে।

ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল জানান, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে রয়েছে দেশের সব চাইতে আধুনিক ইউনিক অপারেশন থিয়েটার যা বাংলাদেশের আর কোথাও নাই এবং এখানে সপ্তাহের ৭ দিনই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। বর্তমানে আটজন ভর্তি রোগীসহ আরো ৩০ জন রোগীর কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার অপেক্ষায় রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতিদিন এক বা একের অধিক কিডনী প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। প্রতিস্থাপনের জন্য ১৪ দিনের প্যাকেজে রোগীর খরচ হবে ৩ লাখ টাকা।

ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এই যাত্রা গৌরবের। ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অর্গান ট্রান্সপ্লান্টসহ এ ধরনের চিকিৎসাসেবা নিতে রোগীদের আর দেশের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। কম খরচে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। দেশের অর্থ বিদেশে গিয়ে ব্যয় করে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন নাই।

ভিসি বলেন, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে বিশ্বমানের ৫টি সেন্টার রয়েছে। রয়েছে দেশের সেরা অপারেশন থিয়েটার। এই হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগের পর দেশের চিকিৎসাসেবা দানে বিশেষ করে সর্বাধুনিক উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। কয়েক শত কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নার্সিং অনুষদের ডীন ও এ্যানেসথেশিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, কিডনী (নেফ্রোলজি) বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, ইউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. ইসতিয়াক আহম্মেদ শামীম, পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন প্রমুখ।