জাপান-ভারতে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

কমেছে ইউরোপ-আমেরিকায়

ইউরোপের কয়েকটি বড় বাজারে পোশাক রপ্তানি কমলেও অপ্রচলিত বাজারে ভালো প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে পোশাক খাত। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অপ্রচলিত বাজারে দেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তৈরি পোশাকশিল্প মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিজিএমইএ এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো- ইপিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্যমতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ২০২১-২২ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি ছিল ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এটা ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে ২৩ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। তবে একই সময়ে জার্মানি এবং পোল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়ন অঞ্চলভুক্ত কিছু বড় বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, ডেনমার্ক এবং নেদারল্যান্ডসে আমাদের পোশাক রপ্তানি ছিল যথাক্রমে ৩ দশমিক ৩৭, ২ দশমিক ৯৪, ২ দশমিক ২৭, এক দশমিক ২৮ এবং এক দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশের শীর্ষ পোশাক রপ্তানি বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১-২২ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি হয় ৯ দশমিক শূন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ৮ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে একই সময়ে যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

আলোচ্য সময়ে (২০২২-২৩ অর্থবছরে) অপ্রচলিত বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানি ৩১ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। মোট পোশাক রপ্তানিতে অপ্রচলিত বাজারের অংশ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক ও ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ইউরোপের বাজারে ২০২১-২২ অর্থবছরে তুলনায় ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৩ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে পোশাক রপ্তানি। তবে ইউরোপের কয়েকটি বড় বাজারে আমাদের পোশাক রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে ইতিবাচক দিক হলো অপ্রচলিত বাজার বিশেষ করে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বাজারে রপ্তানি বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের পোশাক আমদানির তথ্য সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান ওটেক্সার হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৩৩০ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছে, ২০০২ সালের মে মাসে যার পরিমাণ ছিল ৪০৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক আমদানি কমেছে ১৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

ওটেক্সার তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের মে মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট পোশাক আমদানি কমেছে ২২ দশমিক ৯২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের মে মাসে মোট পোশাক আমদানি করেছে ৩ হাজার ১৫১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের, যা ২০২২ সালের মে মাসে ছিল ৪ হাজার ৮৯ কোটি ডলার।

পরিসংখ্যান বলছে, শুধু বাংলাদেশ নয়; যুক্তরাষ্ট্র আমদানি কমিয়েছে চীন, ভিয়েতনাম, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়া থেকেও। যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের মে মাসে চীন থেকে পোশাক আমদানি করেছে ৫৭৬ কোটি ডলারের, যা ২০২২ সালের মে মাসে ছিল ৮২৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আমদানি কমেছে ৩০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।