বাংলার কালো ছাগল (ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট) উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (এফএও) ও আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তির মূল্যায়নে বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বিশ্বের অন্যতম সেরা জাত বিবেচিত হয়েছে। বিশ্বে যে পাঁচটি দেশে দ্রুত হারে ছাগল উৎপাদন বাড়ছে বাংলাদেশ তার অন্যতম।
এক সময় খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও আশপাশের চার জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন ছিল বেশি। বর্তমানে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গলের উৎপাদন বেড়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, দেশে লালন-পালন হওয়া ছাগলের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি।
বছরে বিক্রিযোগ্য হয় এক কোটিরও বেশি। যার ৭০ শতাংশ ব্ল্যাক বেঙ্গল। বর্তমানে কোরাবানির পশুর হাটে ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট অন্যতম স্থানে আছে। তবে ঈদের এই সময়টায় ছাগলের চেয়ে গরু বিক্রি হয় বেশি। বগুড়ার প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, প্রতিটি উপজেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন বেড়েছে। যে সংখ্যা অন্তত ৩ লাখ। এই ছাগলের প্রজনন ক্ষমতা বেশি।
বছরে দুইয়ের অধিক (কখনো একসঙ্গে চারটি পর্যন্ত) বাচ্চা প্রসব করে। এই জাতের ছাগলকে আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায় না। প্রতিদিন অনেকটা সময় তৃণভূমিতে চরাতে হয়। ছাগল অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় শহরতলির অনেকে বাসাবাড়িতে এই ছাগল পালন হচ্ছে।
গ্রামাঞ্চলই ছাগল পালনের উর্বর ভূমি। বিশেষ করে উঁচু এলাকায় ছাগল স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে। একটা সময় যমুনার পশ্চিম প্রান্তে লম্বা কানের এক ধরনের ছাগল পালন হতো, যা রাম ছাগল নামে পরিচিত। রাম ছাগল বছরে একটির বেশি বাচ্চা দিতে না পারায় এর পালন কমেছে। অন্যদিকে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কম সময়ে উচ্চতা বেড়ে হৃষ্টপুষ্ট হওয়ায় তাড়াতাড়ি হাটবাজারে তুলে বিক্রি করা যায়। একেকটি ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু হয়।