চট্টগ্রামে মুরগির দামে স্বস্তি, কেজিতে কমল ৬০ টাকা

চট্টগ্রামে কোরবানি ঈদ আসার আগে দাম কমল মুরগির। ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালি এবং দেশি-সব ধরনের মুরগির দাম পাইকারি ও খুচরা দুই বাজারেই কমেছে। গত মার্চ মাসে মুরগির দামে রেকর্ড ছোঁয়ার পর ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে প্রায় নাগালের মধ্যেই চলে আসল। মূলত কোরবানি ঘিরে মুরগি মাংসের চাহিদা কমে যাওয়ায় এই দাম কমল।

খুচরা বাজারে সোমবার ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হয়েছে কেজি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়। আর লেয়ার বা ডিমপাড়া মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি ৩৪০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকায়। আর দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি ৫৯০ টাকায়।

এক সপ্তাহ আগেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল কেজি ২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছিল ৩৮০ টাকায় আর দেশি মুরগি বিক্রি হয়েছিল কেজি ৬১০ টাকার ওপরে। সে হিসেবে ব্রয়লারের দাম কমেছে কেজি ৬০ টাকা, সোনালি মুরগি কমেছে ১৪০ টাকা, আর দেশি মুরগির দাম কমেছে কেজিতে ২০ টাকা।

জানতে চাইলে রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘কোরবানি ঈদ আসছে। সে জন্য মুরগির চাহিদা কমেছে এক সপ্তাহ আগে থেকেই।

এই কারণে খামারিরা মুরগির দাম কমিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েকদিন আগে দাম আরো কমে গিয়েছিল। আশা করছি আগামী সপ্তাহে দাম আরো কমে আসবে।’ শুধু কোরবানি ঈদের কারণেই মুরগির দাম কমেছে এমনটি মনে করেন না ফিড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, সে জন্য মুরগির চাহিদাও কমেছে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে কোরবানি। এই কারণে আগামী সপ্তাহে দাম আরো কমবে।

তিনি বলেন, খামার পর্যায়ে ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে কেজি ১৬০ টাকা, সোনালি মুরগি কেজি ২২৫ টাকায়। আর লেয়ার বিক্রি হয়েছে কেজি ৩২০ টাকায়। গত এক মাসে পোল্ট্রি খাদ্যের দাম কমে আসার পরও ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে আমাদের খরচ হয়েছে ১৬২-১৬৭ টাকা। ফলে এখন লস দিয়েই খামারিরা মুরগি বিক্রি করছেন।

চট্টগ্রামের যেকোনো কাঁচাবাজারের মুরগির এই দামের সঙ্গে কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজারের দামের পার্থক্য অনেক। নগরীর হালিশহর ফইল্যাতলী বাজারে সোমবার সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি ২৪০ টাকা, আর কাজির দেউড়ি বাজারে মূল্য তালিকা টাঙ্গিয়ে বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৮০ টাকা; দামের ব্যবধান কেজিতে ৪০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি কাজির দেউড়িতে বিক্রি হচ্ছে কেজি ২১০ টাকা আর আধা কিলোমিটার দূরের আরেক কাঁচাবাজার ব্যাটারি গলিতে বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ টাকায়। এমনকি দুইশ মিটার দূরে আসকারদিঘির পাড়ের কাঁচাবাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি ১৮০ টাকায়। ফইল্যাতলী বাজারেও বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা কেজি।

দরের কেন এত ব্যবধান জানতে চাইলে কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজারে মুরগি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, সরবরাহকারী ভ্যান গাড়ি থেকে গড়পড়তা মুরগি কিনলে আমরাও আরো কমে বিক্রি করতে পারতাম। আমরা একটু বাছাই করে কিনি বলেই দাম বাড়তি থাকে।

কাজির দেউড়ির এই দামের বিশাল পার্থক্যের কারণে বেশির ভাগ ক্রেতা এখন বাজার বিমুখ হচ্ছেন। পাশাপাশি বাজারগুলো এখন ওই ক্রেতা টেনে নিচ্ছেন শুধুমাত্র দামের পার্থক্যের কারণেই। ফলে ছোট সেই বাজারগুলো এখন ক্রেতাও বেশি পাচ্ছেন।