এক মাসে বিদেশী বিনিয়োগ ১০৮ শতাংশ বেড়েছে

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে আগের মাসের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। শেয়ারবাজারের বৈদেশিক বাণিজ্যের মোট লেনদেন এপ্রিল মাসে ১৮২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা আগের মাসের ৮৭.৫১ কোটি টাকা থেকে ১০৮ শতাংশ বেশি।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন দীর্ঘ সময়ের বাজারের অস্থিরতার পড়ে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা, বিশেষ করে দুবাই-ভিত্তিক বিনিয়োগকারীরা গত মাসে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করেছেন বলে ডিএসইর একজন স্টক ব্রোকার জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য পুঁজিাবজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিভিন্ন উদ্যোগ বিশেষ করে দুবাইসহ অনেক দেশে রোডশোর ফলে বিদেশী বিনিয়োগ বেড়েছে পুঁজিবজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এছাড়াও বেশিরভাগ তালিকাভুক্ত কোম্পানি এখন সর্বশেষ প্রান্তিকে ভালো আয় করেছে যার ফলে পুঁজিবাজারে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হচ্ছেন। জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে ডিএসইতে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের টার্নওভারের পরিমাণ ছিল ১৯২.৪৬ কোটি টাকা এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে ছিল ১৭৪.৮৪ কোটি টাকা।

বিএসইসির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার একাধিক উদ্যোগের কারণে দেশের পুঁজিবাজার ধীরে ধীরে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক হয়ে উঠছে। তিনি আরও বলেন, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

সম্প্রতি জাপানের রাজধানী টোকিওতে এক বিজনেস সামিটে বক্তৃতাকালে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল-ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন অন্যান্য দেশের বাজারের তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল।

আইডিএলসি ফাইন্যান্সের এক মাসিক ব্যবসায়িক পর্যালোচনা অনুসারে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশী ইকুইটি মালিকানা মোট বাজার মূলধনের ৩.৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

যা ২০১৫ সাল থেকে রেকর্ড করা হয়নি এতটা নিচে নেমে গেছে। এ ধরনের নড়বড়ে পরিস্থিতির পরে, সাম্প্রতিক ডিএসইর লেনদেনে তারল্য পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক উদ্বেগ এবং কার্যকর করপোরেট আয়ের সহজতার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে। গত বুধবার ডিএসই লেনদেন ৯৬৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা চলতি বছরের ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বিশ্বব্যাপী সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এখন পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে। স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা যারা একসময় সাইডলাইনে ছিলেন, তারা এখন ইক্যুইটিগুলিতে নতুন বিনিয়োগ করা শুরু করেছেন।