ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে পড়াশোনা করে বিশ্বসেরা বহুজাতিক কোম্পানি ‘গুগল’-এর টেকনিক্যাল রিক্রুইটার হিসেবে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন বাংলাদেশি আহাবারা জাহান আলম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইন্সটিটিউট থেকে পড়াশোনা করা এই পরিশ্রমী মানুষটার পথচলার গল্প তুলে ধরেছেন মো. আরিফ হাসান
ছোটবেলা থেকে ঢাকায় বেড়ে ওঠা আহাবারা জাহান শৈশবকাল কাটিয়েছেন ঢাকায় এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। আহাবারা জাহান ২০১০ সালে এ-লেভেলের পড়াশোনা শেষ করেন। আইন বিষয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও মায়ের আবদার রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-তে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ভর্তির সুযোগ পেয়ে ফাইন্যান্সকে মেজর এবং মার্কেটিংকে মাইনর বিষয় নিয়ে ২০১১ সালে শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পথচলা। ২০১৫ সালে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক শেষ করেন।
স্নাতক শেষে ফুডপান্ডায় মার্কেটিং ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে তার কর্পোরেট জীবনের সূচনা হয়। এর কিছুদিন পর তিনি ‘পারফেট্টি ভ্যান মেলে’ নামক ইতালিয়ান বহুজাতিক কোম্পানিতে ‘এইচআর ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি’ হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত খুবই সুন্দর সময় কাটানোর সাথে উক্ত কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজারের পদে উন্নীত হন। এরপর তিনি জার্মানিতে পাড়ি জমান, আর তখনই বিশ্বব্যাপী শুরু হয় কোভিড-১৯। জার্মান ভাষা শেখা, নতুন করে চাকরি খোঁজা, সাক্ষাৎকার দিয়ে মনোনীত না হওয়ার দরুণ এ সময়টাকে জীবনের কঠিন সময় হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
এরপর নিজের বায়োডাটায় ‘টেকনিক্যাল রিক্রুইটার’ পদমর্যাদা যুক্ত করতে তিনি কনটেকস নামক কোম্পানিতে যোগদান করেন, যারা বিএমডব্লিউ, ল্যাম্বারগিনির মতো কোম্পানির সাথে কাজ করত। এরপর সময় তার অনুকূলে বইতে শুরু করে। হঠাত্ লিংকডিনে একদিন ‘নাশ ডিরেক্ট’ নামক একটি কোম্পানি থেকে সাক্ষাৎকারের ডাক পান, যারা মূলত গুগলের জন্য তৃতীয় পক্ষ হিসেবে কাজ করে। সাক্ষাৎকারের মাত্র দুদিনের মাঝেই তিনি নাশ ডিরেক্টে কোম্পানির জন্য গুগল কর্তৃক মনোনীত হন।
স্বপ্ন ছিল, নাশ ডিরেক্ট থেকে গুগলে স্থায়ী হওয়ার। তিনি ৪ মাসের মধ্যেই আবেদন করেন এবং ৩ ধাপের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গুগলার হিসেবে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি গুগলের পোলেন্ড দপ্তরের জন্য প্রকৌশলী নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত রয়েছেন। তার স্বপ্ন বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব প্রান্তের নারীদের জন্য গুগলে কাজ করার পথটা আরও মসৃণ করে তোলা।