শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী রেখে ঈদে বিনিয়োগকারীরা

ঈদের আগে শেষ কার্যদিবস মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে ঈদের আগে টানা পাঁচ কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়লো।

ঈদের আগে শেয়ারবাজারে এমন টানা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলায় বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। অবশ্য বিনিয়োগকারীদের স্বস্তি পুরোপুরি ফেরেনি। কারণ এখনো অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে।

ঈদের আগে শেষ কার্যদিবসে নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে এসেছে ৪টি প্রতিষ্ঠান। এতে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে।

এমন বিপুল পরিমাণ প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সংকটে পড়ার দিনে ডিএসইতে ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ১৯৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখানো ৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়লো।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৮১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

শেয়ারবাজারে এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেওয়ার কিছুটা সন্তোষ প্রকাশ করে বিনিয়োগকারী ইব্রাহিম বলেন, গত তিনদিনে বিনিয়োগ করা শেয়ারের দাম কিছুটা বেড়েছে। দাম বাড়ার গতকাল ও আজ কিছু শেয়ার বিক্রি করেছি। ঈদের আগে কিছুটা মুনাফা করতে পারায় ভালো লাগছে।

ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী বলেন, রোজার শুরুর দিকে শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ বেশি ছিল। কিছু বিনিয়োগকারী ঈদের খরচ জোগাড় করার জন্য বিক্রির চাপ বাড়ায়। এখন বিক্রির চাপ কমেছে। এছাড়া রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বেড়েছে। এখন শেয়ারবাজারে যে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, আশাকরি ঈদের পরও তা অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে, দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৪৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১১৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪১ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেমিনি সি ফুডের ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইস্টার্ন হাউজিং, জেনেক্স ইনফোসিস, আমরা নেটওয়ার্ক, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, নাভানা ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ১১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬টির এবং ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।