করোনাভাইরাসের পরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে যে অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, সেটা সামলাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।
ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আতিউর রহমান বলেন, ‘আস্তে আস্তে আমাদের কয়লাভিত্তিক জ্বালানি থেকে সরে আসতে হবে। এখন সৌরবিদ্যুতের ক্ষমতা অনেক বেড়েছে। আগের চেয়ে অনেক ভালো কাজ করে। আমাদের অর্থনীতির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদের নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে।’
শনিবার বিকেলে আইসিএসবি এই সেমিনার আয়োজন করে। সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কার্যালয়ে।
সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য কী ঝুঁকি তৈরি করেছে। এই ঝুঁকি থেকে বের হয়ে আসার পথ কী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
আতিউর রহমান তার প্রবন্ধে বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে নতুন নতুন সবুজ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। জ্বালানি সাশ্রয়ী অবকাঠামো বিনিয়োগ করতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া এসব বিষয়ে সরকার আগে যেসব উদ্যোগ হাতে নিয়েছিল সেখান থেকে শিখতে হবে। পরিবেশবান্ধব ব্যবসাগুলোকে বাড়াতে কর ছাড় দিতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন ‘করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের সরবরাহ ব্যবস্থা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছিল, খাদ্য নিরাপত্তা কমে গিয়েছিল, সামগ্রিকভাবে দেশের আয়ে ভাটা পড়েছিল এবং দেশ জ্বালানি সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে আমাদের রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। রপ্তানিতে ভাটা পড়েছে। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী ব্যবসাগুলোকে প্রণোদনা দিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া বিশ্বের কোথা থেকে কম দামে পণ্য কেনা যায়, সেসব খুঁজে বের করতে হবে। বড় বড় প্রকল্পে অপচয় বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এই যুদ্ধ সহসা শেষ হবে না। যদি শেষ হয়েও যায়, অর্থনীতি ঠিক হতে আরও সময় নেবে। তাই পৃথিবীর দেশগুলো এই সমস্যা আরও অনেক দিন ধরে দেখবে। বাংলাদেশকে এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’