কাপ্তাইয়ের বুকজুড়ে রসালো তরমুজ

কাপ্তাই হ্রদের বুকে অসংখ্য টিলা। পতিত এসব জমি ছেয়ে গেছে সবুজে। তার মধ্য থেকে উঁকি দিচ্ছে ডোরাকাটা তরমুজ। জুম পদ্ধতিতে রসালো ফলটি আবাদে ভালো ফলন পেয়েছেন রাঙামাটির চাষিরা।

কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়ে উচ্ছ্বসিত ষাটোর্ধ্ব কৃষক রুস্তম আলী জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তাঁর মতো অন্য কৃষকরাও কাপ্তাই হ্রদের বুকে জেগে ওঠা ছোট ছোট টিলায় তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। রাঙামাটির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলাতেও যাচ্ছে এসব তরমুজ। আগাম জাত ওঠায় ভালো দাম আশা করছেন চাষিরা।

রাঙামাটি শহরের অদূরে মগবান ইউনিয়ন এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী স্থানে জুমের এক একর পতিত জমিতে তরমুজ চাষ করেন রুস্তম আলী। এ জন্য তিনি হ্রদের উঁচু টিলা ১০ হাজার টাকায় বর্গা নেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এ বছর রাঙামাটিতে ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২০০ টন। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় তীরবর্তী স্থান– জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, কাপ্তাই, রাঙামাটি সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষ হয়েছে।

পাহাড়ি জাতের তরমুজ সাধারণত এপ্রিলে পুরোদমে বাজারে আসে। তবে চলতি মাসে কিছু আগাম জাত বাজারে উঠেছে। জেলার বনরূপা, তবলছড়ি, রিজার্ভ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের তরমুজ ৩০ থেকে ৪০, মাঝারি আকারের ১০০ এবং বড় আকারের তরমুজ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছেলে আসর আলী ও মেয়ে শারমীনকে নিয়ে তরমুজ ক্ষেত পরিচর্চা করছেন রুস্তম আলী। উঁচু টিলায় গর্ত করে শ্যালো পাম্পের সাহায্যে পানি তুলে তরমুজ গাছের গোড়ায় দিচ্ছেন। নিয়মিত পানি ছাড়াও ইউরিয়া সার, গোবর ও ওষুধ দেন বলে জানান তাঁরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আপ্রু মারমা বলেন, ‘এবার কম বৃষ্টি এবং কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় তীরবর্তী টিলায় ব্যাপক পরিসরে তরমুজ আবাদ হয়েছে। আগাম ফলন হওয়ায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।’