স্ট্রবেরি চাষে সফল গোপালগঞ্জের দিলীপ

স্ট্রবেরি চষে সফল গোপালগঞ্জের চাষি দিলীপ কুমার রায়। তিনি ১২ বছর ধরে স্ট্রবেরী চাষ করে আসছেন। কুয়েত ফেরত দিলীপ ভালোভাবে স্ট্রবেরি চাষ রপ্ত করেছেন।এ বছর তিনি ১০ শতাংশ জমিতে স্টবেরির চাষ করেন। এ পর্যন্ত তিনি ১০ শতাংশ জমি থেকে ৫০ হাজার টাকা স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন। আরও ২৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরি তিনি বিক্রি করবেন বলে জানান।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) প্রণোদনার চারা, সার ও পরামর্শ পেয়ে তিনি এ বছর স্টবেরির চাষ করে লাভবান হয়েছেন।

বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলুবীজ হিমাগারের উপপরিচালক কৃষিবিদ দিপংকর রায় বলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ‘জীবপ্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষি বীজ উন্নয়ন ও বর্ধিত করণ প্রকল্পের’ আওতায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক দিলীপ কুমার রায়কে স্ট্রবেরী চাষের একটি প্রদর্শনী দেওয়া হয়। তিনি ১০ শতাংশ জমিতে গত বছরের ৯ নভেম্বর স্টবেরির চাষাবাদ করেন। আমরা তাকে প্রণোদনার চারা, সার প্রদান করেছি। সেই সঙ্গে দিয়েছি পরামর্শ। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে তিনি স্টেবেরির ফলন পেতে শুরু করেছেন। চলতি মার্চ মাস পর্যন্ত এ দর্শনী প্লট থেকে তিনি স্টবেরীর ফলন পাবেন। প্রতি শতাংশে স্ট্রবেরী ২২ থেকে ২৫ কেজি ফলন দেয়। ১ শতাংশ জমিতে স্টবেরি চাষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। খরচ বাদে স্টবেরিতে প্রতি শতাংশে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। তাই লাভজনক স্ট্রবেরি চাষ সম্প্রসারিত হলে কৃষক লাভবান হবেন। কৃষক লাভবান ও স্ট্রবেরি চাষাবাদ সম্প্রসারিত হলেই এ প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্বার্থক হবে।

গোপালগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত ১০ বছর কুয়েতে ছিলাম। সেখানে উজারাতুল হায়াত ও আলাগাতানী স্টিল কোম্পানিত চাকরি করেছি। তাদের গ্রিন হাউসে স্ট্রবেরি, টমেটো, শশা, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটিসহ বিভিন্ন ফসল ফলিয়েছি। দেশে আসার পর বিএডিসির গোপালগঞ্জ আলু বীজ হিমাগার কর্তৃপক্ষ আমাকে দিয়ে স্ট্রবেরির চাষ করাচ্ছে। আমি ১২ বছর ধরে স্টবেরির চাষ করছি। স্ট্রবেরির চাষ করে আমি লাভবান হয়েছি।

ওই কৃষক বলেন, এ বছর ১০ শতাংশ জমিতে স্টবেরির চাষ করেছি। এ পর্যন্ত ১০ শতাংশ জমি থেকে ৫০ হাজার টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছি। আরও ২৫ হাজার টাকার স্ট্রবেরি তিনি বিক্রি করব। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে স্ট্রবেরি সংগ্রহ শুরু করি। প্রথম দিক দিয়ে প্রতি কেজি স্টবেরি ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এখন ৮০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। অনেক ক্রেতারা ক্ষেতে এসেই স্টবেরী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) প্রণোদনার চারা, সার ও পরামর্শ পেয়ে এ বছর স্টবেরীর চাষ করে লাভবান হয়েছি। আগের বছরগুলোতেও আমি স্ট্রবেরি চাষ করে লাভবান হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমাকে একটি গ্রিন হাউস করে দিলে আমি প্রায় সারা বছর স্ট্রবেরির চাষ করতে পারব। আমার দেখাদেখি আরও অনেক চাষি গ্রিন হাউস করে স্ট্রবেরিসহ শাকসবজি চাষে এগিয়ে আসবেন। এতে আমাদের কৃষি সমৃদ্ধ হবে।

গোপালগঞ্জ শহরের ফল বিচক্রেতা রতন সাহা বলেন, রঘুনাথপুরের স্টবেরি জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা ১১০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা কেজি দারে বিক্রি করেছি। এখন বাজারে থাইল্যান্ডের স্টবেরি এসেছে। ওই স্ট্রবেরি ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু রঘুনাথপুরের স্ট্রবেরি ক্রেতারা ৮০০ টাকা দরে কিনছেন। কারণ ওই স্ট্রবেরির স্বাদ ও গুণগত মান খুবই ভালো।

বৈরি ক্রেতা গোপালগঞ্জ শহরের নুসরাত জাহান বলেন, গোপালগঞ্জের দিলীপের উৎপাদিত স্টবেরির স্বাদ ভালো। এ স্টবেরী মান সম্পন্ন। তাই একটু বেশি দামে এ স্ট্রবেরি আমরা ক্রয় করছি। বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে এ স্ট্রবেরি আমরা ব্যবহার করছি। আবার সরাসরি এ স্ট্রবেরি আমরা খাচ্ছি।