বাংলা বানান নিয়ে ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে ডিজিটাল মাধ্যমে কাজ করছে ‘বানান আন্দোলন’। এই নামের অ্যাপটি এখন ডিজিটাল মাধ্যমে বাংলা শব্দের সবচেয়ে বড় তথ্য ভান্ডার। লক্ষাধিক শব্দ এবং সেসব শব্দ সম্পর্কিত সাত লক্ষাধিক তথ্য রয়েছে তাতে।
কুষ্টিয়ার ওয়াহেদ সবুজ ও রেজবুল ইসলামের মাধ্যমে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু বানান আন্দোলনের। পরে এর সঙ্গে আরও ১০ জন যুক্ত হন। ২০২০ সালে গুগলের প্লে-স্টোরে বানান আন্দোলনের অ্যাপ নিয়ে আসতে ৩০ জনের একটি দল প্রায় চার মাস কাজ করেন। সেখান থেকে অ্যাপটি ১০ হাজারের বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
বানান আন্দোলনের সম্পাদক ওয়াহেদ সবুজ বলেন, একদিন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ঢুকে দেখি দুটি দরজায় ‘সরকারি’ বানান দুই রকম। একটিতে ঈ-কার এবং অন্যটিতে ই-কার। পরে বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে দেখি নোটিশে বা বিভাগের নামে বিভিন্ন শব্দে বানানের ভুল আছে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এত বানান ভুল দুঃখজনক। তখন আমরা কয়েকজন মিলে বানান শুদ্ধকরণে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করি। ফেসবুকে গ্রুপ খুলি। ২০২০ সালে করোনাকালে এ নিয়ে কাজের অনেক সময় পেয়েছি। সে সময় অনেক দিন ‘বানান আন্দোলন’ দেশে আলোচনায় চলে আসে।
রেজবুল ইসলাম আমাদের আইটি বিভাগের প্রধান। এই তথ্যভাণ্ডার গুগলের অ্যান্ড্রয়েড প্লে-স্টোরে অ্যাপ আকারে বিনামূল্যে পাওয়া যায় ‘বানান আন্দোলন’। এই অ্যাপে প্রতিটি শব্দের সঙ্গে তার অর্থ, শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে কী হয়, শব্দটির উৎস, বানান, শব্দের পদ পরিচয়, উচ্চারণ এবং পরিভাষা আছে।
বানান আন্দোলনের অ্যাপে শুদ্ধ বানানের পাশাপাশি ১০ হাজার অশুদ্ধ বানানও রয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কোনো শব্দের প্রচলিত অশুদ্ধ বানান সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেমন অ্যাপটিতে ‘ঘুষ’ লিখলে বানান আন্দোলন জানাবে যে এটি অশুদ্ধ বানান।
তিনি আরও বলেন, সামনে বানান আন্দোলনের আরও কিছু ডিজিটাল পণ্য আসছে। বাংলায় লেখা বিভিন্ন বইতেও বানানের ভুল রয়েছে। এ বইগুলোতে বাংলা বানানের শুদ্ধাচার আনতে ‘বানান আন্দোলন’-এর নতুন বিভাগ প্রুফ রিডিং ইউনিট। এই দল বিভিন্ন প্রকাশনীর বইয়ের প্রুফ রিডিং এবং সম্পাদনা করে। দুই বছরে তিন শতাধিক বইয়ের প্রুফ রিডিং ও সম্পাদনা করেছে সংগঠনটি। ফলে ভুল বানান থাকা বইয়ের পরের সংস্করণে বানান শুদ্ধ করে প্রকাশ করা যায়।