৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য শোধিত হয়ে যাচ্ছে বালু নদে

হাতিরঝিলের দক্ষিণ পাশে নির্মিত ছয়টি ও উত্তর পাশে নির্মিত ছয়টি স্পেশাল স্যুয়ারেজ ডাইভারশন স্ট্রাকচার (এসএসডিএস) এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পয়ো:বর্জ্য শোধন করছে ঢাকা ওয়াসার নতুন নির্মিত দাশেরকান্দি পয়ো:শোধানাগর। এসব এলাকা থেকে আসা প্রায় ৫০ কোটি লিটার পয়োবর্জ্য শোধন করে ফেলা হচ্ছে বালু নদীতে। এতে প্রায় ৫টি খালসহ বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর দূষণ কমছে।

প্রকল্প এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, হাতিরঝিলের পানি শোধন করে পাশের বালু নদীতে ফেলা হচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় রমনা থানার অর্ন্তর্গত এলাকা, মগবাজার ওয়্যারলেস রোড, ইস্কাটন, নয়াটোলা, মৌচাক, আউটার সার্কুলার রোড, নয়াটোলা মহানগর হাউজিং এলাকা, উলন ও তত্সংলগ্ন এলাকা, কলাবাগান ও ধানমন্ডি (পূর্বাংশ)। এ ছাড়া তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, তেজগাঁও এলাকা, নাখালপাড়া, নিকেতন, বাড্ডা, বনানী ও গুলশান (আংশিক) এলাকার পয়ঃর্বর্জ্য ও কিচেন ওয়াটার ওয়াসার মাধ্যমে পাইপলাইনের মাধ্যমে হাতিরঝিল রামপুরার পাশে ওয়াসার স্যুয়ারেজ লিফটিং স্টেশনে পড়ছে। সেখানে পলিথিনসহ বড় বড় বর্জ্য শোধন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে দাশেরকান্দি শোধনাগারে পাঠানো হয়। সেখানে কয়েক দফা ট্রিটমেন্ট করে স্বচ্ছ পানি বালু নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে বালু নদীর দূষণ কমানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া পয়:শোধনের ফলে উত্পন্ন ফ্লাই অ্যাশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

ঢাকার চারপাশের নদী দূষণের অন্যতম কারণ পয়োবর্জ্য। ঢাকার ফুসফুস খ্যাত হাতিরঝিলকে রক্ষা করতে দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। পুরো ঢাকার পয়োবর্জ্য লাইনের আওতায় আনতে ২০১৩ সালে ঢাকা মহানগরীর পয়োনিষ্কাশন মহাপরিকল্পনা তৈরি করে ওয়াসা। ঢাকার চারপাশের নদীদূষণ রোধে পাঁচটি শোধনাগার নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে আফতাবনগরের কাছে দাশেরকান্দিতে শোধনাগার প্রকল্প নেয় ওয়াসা। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়াধীন ঢাকা ওয়াসার এই প্রকল্প। উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব (ডিপিপি) অনুযায়ী ২০১৫ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। তবে দুই দফা সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ৩ হাজার ৪৮২ কোটি ৪২ লাখ টাকার এই প্রকল্পটি এখন নিয়মিত বর্জ্য শোধন করছে। তবে এখনো প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়নি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সময় চেয়েছে ঢাকা ওয়াসা।