গত ১০ বছরে যশোরে ঈর্ষণীয় উন্নয়ন হয়েছে। জেলায় মেডিক্যাল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ভৈরব নদ খনন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক, হাইওয়ে সড়কসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
এরমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় আট কোটি ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ভৈরব নদের চার কিলোমিটার ড্রেজিং ও খনন, এলজিইডির আওতায় ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে চুরামনকাঠি ও কায়েমখোলা সড়ক উন্নয়ন, ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সুলতানপুর সড়ক উন্নয়ন, এক কোটি ৫৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে বিজয়নগর নোঙ্গরপুর খয়েরতলা সড়কের উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চাঁদপাড়া ফতেপুর হাসেমপুর সড়ক উন্নয়ন, এক কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ছাতিয়ানতলা থেকে কামারগন্না সড়ক, ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে মোবারককাঠি খরছেডাঙ্গা সড়ক উন্নয়ন, দুই কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে রূপদিয়া জামতলা রোস্তমপুর সড়ক উন্নয়ন, এক কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে হৈবতপুর আম বটতলা সড়ক উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
দশ বছরে শিক্ষাক্ষেত্রেও এসেছে পরিবর্তন। ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ৩০৫ কোটি টাকায় শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, এক কোটি টাকা ব্যয়ে বিমান বন্দরে আধুনিক টার্মিনাল নির্মাণ, যশোর মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নে টাকা বরাদ্দ হয়।
এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ১০ তলা ভবন, যশোর রেলস্টেশন আধুনিকায়ন, পিটিআইয়ে অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণ, দৃষ্টি নন্দন আধুনিক পোস্ট অফিস ভবন নির্মাণ, যশোর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ৫তলা ভবন নির্মাণ, যশোর পৌর পার্ক দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিকায়ন করা, যশোর সদর উপজেলার অধিকাংশ রাস্তা পুনঃনির্মাণ ও পাকাকরণ, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলা বিশিষ্ট ২০টি অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ হয়েছে।
রেলরোড এলাকার আব্দুল বারী বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে যশোর সদরের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন সন্তোষজনক। এখানে ভাঙা-চোরা রাস্তা তেমন চোখে পড়ে না।
স্থানীয় কলা ব্যবসায়ী মো. জাহিদ হোসেন বলেন, যশোরের রাস্তা-ঘাট খুবই ভালো। এক বছর ধরে যশোরে থাকা অবস্থায় ভাঙা-চোরা রাস্তা পাইনি।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক শেখ মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, যশোর বিভিন্ন সরকারের আমলে অবহেলিত ছিল। এ কথা সত্যি যে বর্তমান সরকারের আমলে যশোরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে টেকসই বা মানসম্মত উন্নয়ন বলতে যা বোঝায় তার ঘাটতি রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ হলেও ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হয়নি। খুলনা-ঝিনাইদহ-মাগুরা-নড়াইলের হাব যশোর হলেও এখানকার বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক করা হয়নি। ভৈরব নদের খনন হয়েছে, কিন্তু নদের জায়গা যেন খালে রূপান্তরিত হয়েছে।
যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর পর তিন মেয়াদে ক্ষমতায় এসে যশোরবাসীকে অনেক কিছু উপহার দিয়েছেন। তিনি আরও উপহার দেবেন।’
কাজী নাবিল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরবাসীকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন, মেডিক্যাল কলেজ দিয়েছেন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক দিয়েছেন, ভৈরব নদ খনন শুরু করেছেন। সম্প্রতি আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের প্রাণের দাবি পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। এছাড়া অতি সম্প্রতি কালনা সেতু উদ্বোধন হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সুন্দরভাবে যশোরের যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। কালনা সেতুর মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পরে সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী যশোর-খুলনা তৃতীয় অর্থনৈতিক করিডোর হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের কিছু প্রাপ্তি বাকি আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, তিনি যেন যশোরকে সিটি করপোরেশন করে দেন। আমাদের আরেকটি দাবি, মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যেন ৫০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করে দেওয়া হয়। যশোর বিমানবন্দরটি অত্যন্ত পুরনো। আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করে দেবেন। তিনি সব সময় আমাদের দক্ষিণবঙ্গের মানুষের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন। আমরা তার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’