৩২ কিলোমিটার রেলপথে প্রথমবার চলল ‘গ্যাংকার’

পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে শরীয়তপুরের জাজিরায় সেতুর প্রান্ত (সংযোগ সেতু) পর্যন্ত বসানো রেল ট্র্যাক (রেললাইনের পাত) পরীক্ষা করা হয়েছে। মঙ্গলবার নির্মাণাধীন এই ৩২ কিলোমিটার রেলপথে একটি গ্যাংকার চালিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এতে সময় লাগে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। উল্লেখ্য, গ্যাংকার হচ্ছে রেল ইঞ্জিনের মতো একটি বগি।

বিভিন্ন সাজে সজ্জিত গ্যাংকারটি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রওনা দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন, শিবচর স্টেশন, শিবচরের কুতুবপুরে পদ্মা স্টেশন হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা স্টেশনে পৌঁছায়। এ সময় প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন, প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ, প্রকল্প সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এফ এম জাহিদ হোসেনসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গ্যাংকারে উপস্থিত ছিলেন।

এই লাইনের ৩২ কিলোমিটারের রেলপথের মধ্যে চার কিলোমিটার হবে পাথরবিহীন। তবে বাকি ২৮ কিলোমিটার রেলপথ পাথরবিশিষ্ট হবে। এই রেলসংযোগ ভাঙ্গার পুরনো রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, এটি নিয়মিত কাজের অংশ। এর আগেও বহুবার গ্যাংকার চালানো হয়েছে। তবে এবারই প্রথম টানা ৩২ কিলোমিটার পথে গ্যাংকার চলেছে। এই অংশের রেলপথের নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। কাজ শেষ করতে অন্তত আরো ছয় মাস লাগবে। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার শেষ কর্মদিবসকে কেন্দ্র করে সৌজন্যমূলকভাবে এই গ্যাংকার চালানো হয়।

শিবচর প্রতিনিধিকে পদ্মা সেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এফ এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্ত থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার রেললাইনে পরীক্ষামূলক রেল চালানো হয়েছে। পদ্মা সেতু হয়ে রেল চালু হওয়ার পর দেশের অর্থনীতিতে অভাবনীয় উন্নতি হবে। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জনপদে যোগাযোগ ও অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি আসবে। আমরা আশা করছি মেয়াদের মধ্যেই ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব। ’

পুরো প্রকল্পকে তিন অংশে বিভক্ত করে নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত প্রকল্পের মোট অগ্রগতি হয়েছে ৬৮.৬৯ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ হয়েছে ৭০ শতাংশ। মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজ হয়েছে ৮৫.৬৫ শতাংশ। ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজ হয়েছে ৫৭.৩১ শতাংশ।

যদিও চলতি বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।