অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের ঘরে পৌঁছে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫৫.৬২ শতাংশ বেশি। এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি বেড়েছে ২০.৫৩ শতাংশ। এ সময়ে ভারতে ১৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ভারতের বাজারে ১২ কোটি ৬১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। বছর শেষে রপ্তানির ৩ বিলিয়ন ডলার দাঁড়াবে- এমনটিই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের ঘরে পৌঁছে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫৫ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সম্প্রতি রপ্তানি আয়ের দেশভিত্তিক হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ভারতের বাজারে ১৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। অর্থাৎ মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেকই পোশাক। বাকিটা পাট ও পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক দ্রব্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য।
২০২১-২২ অর্থবছরের ভারতে ১৯৯ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার (প্রায় ২ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৭১ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার ডলার। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে এসেছে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। ১০ কোটি ১০ লাখ ২০ হাজার ডলার এসেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে।
এছাড়া কটন ও কটন প্রোডাক্টস থেকে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং প্লাস্টিক দ্রব্য থেকে ৩ কোটি ৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে।
ইপিবির সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, একক দেশ হিসেবে ভারত এখন বাংলাদেশের সপ্তম রপ্তানি বাজারের তালিকায় উঠে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের শীর্ষ ১০ বাজারের একটি এখন ভারত। অথচ ২০২০-২১ অর্থবছরেও বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ রপ্তানি বাজারের তালিকায় ভারতের স্থান ছিল না। আগের বছরগুলোতে ভারতের অবস্থান ছিল ১৪ থেকে ১৫তম স্থানে।
তালিকায় সবার ওপরে বরাবরের মতোই যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান করছে। দ্বিতীয় স্থানে জার্মানি। তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, স্পেন ও পোল্যান্ড। পোল্যান্ড ও ভারতে রপ্তানির অঙ্ক প্রায় কাছাকাছি। গত অর্থবছরে পোল্যান্ডে রপ্তানি হয়েছে ২১৪ কোটি ২৪ লাখ ডলারের পণ্য।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে মাত্র তিনটি অর্থবছরে ভারতে পণ্য রপ্তানি ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের বেশি হয়েছে, তাও সেটা গত তিন বছরে। তার আগের বছরগুলোয় ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ভারতে ১২৮ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেন, যা ছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে এ আয় বেশি ছিল প্রায় ১৭ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারতের বাজারে ১২৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে ১০৯ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ডলারে নেমে আসে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ভারত বাংলাদেশকে অস্ত্র ও মাদক বাদে সব পণ্যে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা দেয়। যদিও সেই সুবিধা খুব বেশি কাজে লাগাতে পারছিলেন না বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা। ২০১১ সালে বাংলাদেশের বেশ কিছু কারখানার কাছ থেকে পোশাক নিয়ে টাকা দেয়নি ভারতীয় কোম্পানি। তাই বেশ কয়েক বছর পোশাক রপ্তানিতে ভাটা পড়ে।
কিন্তু গত কয়েক বছরে ভারতের বিভিন্ন শহরে পোশাকের নামিদামি বিদেশি অনেক ব্র্যান্ড বিক্রয়কেন্দ্র খোলায় তাতে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পায়।