পদ্মা সেতু: প্রশংসায় ভাসছে বাংলাদেশ

পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের ঐতিহাসিক দিন আজ। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশে নিযুক্ত সব বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত থাকছেন। যার মধ্য দিয়ে তারাও ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিচ্ছেন। পদ্মা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে অসম্ভবকে সম্ভব করায় এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের সরকার বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। মঙ্গল কামনায় শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত, চীন, জাপান, ইতালি, অস্ট্রেলিয়াসহ একাধিক দেশের রাষ্ট্রদূত। নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি করায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল উইং সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থিত বিশ্বের ৭৮ মিশনে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি দেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। ক‚টনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্তে উপস্থিত থাকার সুযোগ তারা হারাতে চান না। তারা সবাই মঙ্গল কামনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এক অভিনন্দন বার্তায় বলেছে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জীবন-মান উন্নয়ন এবং বাণিজ্য এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। দক্ষিণ এশিয়ায় সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেতৃত্বকে এগিয়ে নেওয়ার আরেকটি সফল উদাহরণ পদ্মা সেতু।

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী গতকাল এই প্রতিবেদককে জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের শুভ মুহূর্তে পাকিস্তানের জনগণের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শেহবাজ শরিফ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গতকাল এক অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু বাস্তবায়ন করায় পাকিস্তানের জনগণ আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। এই সেতুর বাস্তবায়ন বাংলাদেশের উন্নয়নের মাইলফলক।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ‘রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক মিনিট’ শীর্ষক এক ভিডিও বার্তায় গত বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আর এক দশকের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এ পর্যায়ে আমি এই অসামান্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

এর আগে চলতি সপ্তাহের বিভিন্ন সময়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নিয়ে একাধিক বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরমি ব্রুয়ার বলেন, ‘পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটি সাফল্য, যা বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের বিষয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের উন্নয়নে এক ‘অবিস্মরণীয় মুহূর্ত’ হতে চলেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জান-কুউন বলেন, ‘পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক অর্জন। জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, ‘পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আস্থার প্রতীক। এই সেতু শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ভারত উপমহাদেশে আঞ্চলিক যোগাযোগে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘পদ্মা সেতু বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের উন্নয়নে জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

ঢাকার রাশিয়ার দূতাবাস এক বার্তায় বলেছে, ‘এই উচ্চাভিলাষী মেগা-প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে, যেটি প্রশংসনীয়।’