বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ছেন শেখ হাসিনা

#বাংলাদেশকে এক অনন্য শিখরে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: তানভীর শাকিল জয়। #শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল: গৌতম লাহিড়ী। #শেখ হাসিনা ফিরেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে: ড. শাহিনূর রহমান। #শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সকল ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণ: ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া। #বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা: কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন।

১৭ই মে, এই দিনটি বাঙালি জাতীয় জীবনে একটি ঐতিহাসিক দিন। বাঙালি জাতির জীবনে ৭ই মার্চ, ২৬শে মার্চ এবং ১৬ই ডিসেম্বরের মতো আজকের দিনটিও আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ দিন। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার কারণেই আজ গণতন্ত্রের মুক্তি মিলেছে, উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার পথে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটা কীর্তি স্থাপন করেছে যেটা শুধুমাত্র যে দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এটা সারা বিশ্বের কাছে অনন্য নজীর স্থাপন করেছে।

দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭০৭তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিরাজগঞ্জ -১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য, তানভীর শাকিল জয়, প্রেসক্লাব অব ইন্ডিয়ার সাবেক সভাপতি গৌতম লাহিড়ী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, জার্মান দূতাবাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট, ফর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, লেখক ও কলামিস্ট, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক কর্নেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।

তানভীর শাকিল জয় বলেন, আজ ১৭ই মে, এই দিনটি বাঙালি জাতীয় জীবনে একটি ঐতিহাসিক দিন। বাঙালি জাতির জীবনে ৭ই মার্চ, ২৬শে মার্চ এবং ১৬ই ডিসেম্বরের মতো আজকের দিনটিও আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ দিন। বাঙালি জাতির অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা, বাঙালি জাতি আজ যেমন বিশ্বে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে, আজকে যে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপান্তরিত হয়েছে, আজকে আমরা সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, আজকে আমরা সারা বিশ্বের মধ্যে ৩৩তম অর্থনৈতিক উন্নয়নের দেশ, আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, আজকে আমরা মৎস্য ও শাকসবজি রপ্তানিতে আমরা বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে আছি, পোশাক রপ্তানিতে আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছি এসব কিছুই কিন্তু তিনি ফিরেছিলেন বলেই সম্ভব হয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বাঙালি যেসকল অসম্ভব সোনালি অর্জনকে সম্ভব করেছে এইসকল কিছুর শুরুই হয়েছে ১৯৮১ সালের ১৭ইমে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর আমরা দেখেছিলাম তাদের হত্যাকারীদেরকে সর্বোচ্চ পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশকে একটি পাকিস্তানি রাষ্ট্রে পরিণীত করার চেষ্টা চালানো হয়েছিল এবং অনেকাংশে তারা সফলও হয়েছিল বটে। তখন ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যে চার মূলনীতি, সেই মূলনীতিকে সম্পূর্ণভাবে পিছনে ঠেলে দিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীর নামে পাকিস্তানি ভাবধারা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে তখন জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেসময় বিদেশে থাকার কারণে রক্ষা পেয়েছিল। আমরা চিন্তাও করতে পারি না যে সেসময় যদি তারা দেশের মাটিতে থাকতেন তাহলে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ থাকতো না। বাংলাদেশ আজ এতো দিনে পুরোপুরি জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণীত হতো। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সেদিন বিদেশে ছিলেন এবং তারপরে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার কারণেই আজ গণতন্ত্রের মুক্তি মিলেছে, উন্নয়ন আর অগ্রযাত্রার পথে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।

 

গৌতম লাহিড়ী বলেন, আমার মতে বাংলাদেশের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ শেখ হাসিনা না ফিরলে কি হতো এটা কিন্তু আমরা ভারতীয়রাও ভাবতে পারিনা! আমারা সবাই জানি সে সময় বাংলাদেশের একটা নৈরাজ্য অবস্থা ছিল। বিশেষ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর এবং দুর্ভাগ্যজনক তিনি বাংলাদেশীদের হাতেই খুন হয়েছিলেন যেটা তিনি নিজেও বিশ্বাস করতেন না। তিনি ভাবতেন ও বলতেন আমাকে আমার দেশের লোকেরা কখনো হত্যা করবে এটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। এতোটাই দৃঢ় বিশ্বাস ছিল তার বাঙালিদের প্রতি। যাই হোক, তার স্মৃতি কিন্তু এখনও অমলিন, তাকে কেউ ভুলতে পারবে না। তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটা কীর্তি স্থাপন করেছে যেটা শুধুমাত্র যে দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, এটা সারা বিশ্বের কাছে অনন্য নজীর স্থাপন করেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন তখন তিনি কার্যত আশঙ্কায় ছিলেন যেহেতু তার পরিবারের সকলকে হত্যা করা হয়েছে হয়তো শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা; তাদের জীবনের কি হবে? বিশেষ করে তার ছোট পুত্র ও কন্যার কি হবে? ফলে তাদের নিয়ে ইন্দিরা গান্ধীই কিন্তু প্রথম দিকে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। এবং সেসময় তার গোটা অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আমাদের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী, সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং যিনি আমাদের সাবেক রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনি শেখ হাসিনা পরিবারের একজন অঘোষিত অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। শেখ হাসিনা পরিবার এখনও হয়তো তাকে মনে করেন। কারণ এইধরনের একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানকে এইধরনের সম্মান দেওয়া, এটা কিন্তু সত্যিই অভূতপূর্ব। এটা আমাদের হৃদয় ছিয়ে যায়। এবং তার মৃত্যুর পরে শেখ হাসিনা যেভাবে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এটা কিন্তু অভাবনীয়। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু যে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন সেই পথেই কিন্তু এগিয়ে চলছেন শেখ হাসিনা। আমি প্রণব বাবুর কাছ থেকে গল্প শুনেছিলাম যে, শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন তখন প্রণব মুখোপাধ্যায় খুব আতঙ্কিত ছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন, তুমি কি সত্যিই দেশে ফিরে যেতে চাও। তখন শেখ হাসিনা তাকে বলেছিলেন যে, আমার দেশের কাছেই আমি ফিরতে চাই। আমার দেশ যে অবস্থানে আছে সেখান থেকে আমার বাবা বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন সেটা যেন আমি প্রতিষ্ঠা করতে পারি। সেই ফিরে যাওয়ার পর থেকে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ড. শাহিনূর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারই নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন তার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে তিনি সহ তার পুরো পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে সেই স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছিল। যারা হত্যা করেছিলেন তাদেরকে আমি পশু বলতে চাই এবং এই নির্মম হত্যার নেতৃত্বদানকারী ছিলেন পাকিস্তানি এজেন্ট জিয়াউর রহমান। ১৫ আগস্টের কালরাতে বিদেশে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। স্বৈরশাসকরা যখন নানা ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে লিপ্ত, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা ও স্বাধিকারের চেতনা থেকে ক্রমবিচ্যুত, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলগুলো যখন জনগণের আস্থাহীনতা ও নানাবিধ সংকটে নিমজ্জিত ঠিক তখনই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আহ্বানে দেশের রাজনীতির হাল ধরতে রাজি হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি ভারত থেকে ফিরে এসেছিলেন প্রিয় জন্মভূমিতে। বাংলাদেশ তারপর থেকে নতুন করে পথ চলা শুরু করে। তাঁর প্রত্যাবর্তনের পর এদেশ পুনরায় ‘জয়বাংলা’র বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল। শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরার সময়টা ছিল অত্যন্ত প্রতিকূল। জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়েই তিনি সেদিন দেশে ফিরেছিলেন। সে সময় জিয়াউর রহমান এবং তার দোসররা ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। ১৯৮১ সালের ১৭ মে ছিল কালবৈশাখীর হাওয়া, বেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৫ মাইল। প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি আর দুর্যোগও সেদিন গতিরোধ করতে পারেনি গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষের মিছিল। মুষলধারার বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে তারা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন নেত্রী কখন আসবেন এই প্রতীক্ষায়। অবশেষে ৪টায় কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে জনসমুদ্রের জোয়ারে এসে পৌঁছান শেখ হাসিনা। তাকে একনজর দেখার জন্য কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর পর্যন্ত রাস্তাগুলো রূপ নিয়েছিল জনসমুদ্রে। ১৭ মে এদেশের ইতিহাসের মাইলফলক। শেখ হাসিনা ফিরেছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর অধরা স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে।

ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া বলেন, একটা পরিবারের ১৮জনকে হত্যার পর সেই পরিবারের রয়ে যাওয়া বাকী দুই জন সদস্যকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট থেকে ১৯৮১ সালের ১৬ইমে পর্যন্ত দেশে আসতে দেওয়া হয়নি! কতোটা মর্মান্তিক বিষয়! ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যেদিন বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করা হয়, তখন শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানা, স্বামী ও দুই সন্তানসহ তখনকার পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। তারা প্রাণে বেঁচে যান। সেসময় আজকের প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আপা জার্মানি ছিলেন বলেই আজকে আমরা যে বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি সেটা তাদের কারণেই সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনার চারবার দেশ পরিচালনায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। তারই নেতৃত্বে স্যাটেলাইট-১-এর উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আকাশ বিজয় করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আকাশ-সমুদ্র-সীমান্ত বিজয় পূর্ণ হয়েছে। দেশকে এই পর্যায়ে উন্নীত করার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা দেশ ও বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ এখনও পর্যন্ত সাফল্য দেখিয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি বৈশ্বিক এই মহামারিতে এখনও জিডিপি সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। বলা চলে রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতা নিঃসন্দেহে আমাদেরকে স্বস্তির জায়গাতে রেখেছে। শেখ হাসিনা এই সময়ে বিশ্বের অল্প কজন সফল সরকারপ্রধানের অন্যতম একজন হিসেবে মর্যাদালাভ করেছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আত্মমর্যাদাশীল একটি রাষ্ট্রের অভিধা লাভ করেছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। রিজার্ভ প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থনৈতিক অনেক সূচকে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধাপে ধাপে পূরণ হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বা রূপকল্প ২০২১-এর সব কর্মসূচি। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে।

কর্ণেল (অব.) কাজী শরীফ উদ্দীন বলেন, ১৭ মে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নিজ দেশে ফিরে আসার দিন। ১৯৮১ সালের এই দিনেই তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য। সেদিনের ঢাকায় লক্ষ মানুষের বাঁধ ভাঙা স্রোত তাঁকে কেন্দ্র করে সমবেত হয়েছিল। তাদের কণ্ঠে ছিল বিচিত্র ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি। শেখ হাসিনার আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম, ‘শেখ হাসিনা তোমায় কথা দিলাম, মুজিব হত্যার বদলা নেব, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নৃশংস হত্যার মধ্য দিয়ে উল্টো স্রোতে চলছিল বাংলাদেশ। স্বাধীনতার আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের গর্ব দিন দিন লুণ্ঠিত হতে হতে মিশে যাচ্ছিল মাটির সঙ্গে। বাংলার মানুষেরও দিনবদল ঘটেনি। বরং শোষণের জাঁতাকলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলছিল। সেদিন তার আগমন বাংলাদেশের মানুষের মনে আশা জাগিয়েছিল নতুন করে। ঠিক যেমন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলার মানুষের স্বাধীনতার আনন্দকে পরিপূর্ণ করেছিল। আর তার আগমনে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুনরুজ্জীবিত হওয়ার আশা জাগল। বঙ্গবন্ধু-কন্যা দেশে এসে আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বৈরশাসনের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করেন। এরপর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ন্যাক্কারজনক গ্রেনেড হামলাসহ ২১ বার তার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়। জীবনকে তুচ্ছজ্ঞান করে বঙ্গবন্ধুর মতো অকুতোভয় নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অবিরত। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের অনুকরণীয় মডেল। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জনশক্তি রপ্তানি, ব্যাংকিং, প্রশাসন থেকে শুরু সকল সেবা বিস্তৃত ও সহজলভ্য করে জনগণের দোর গোঁড়ায় পৌঁছে দিয়ে তিনি এক অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধন করেছেন। গণতন্ত্র, শিক্ষা, শান্তি ও দারিদ্র্য হ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘ, ইউনেস্কো, এফএওসহ বিভিন্ন বিশ্বসংস্থা কর্তৃক অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা এবং পরিবেশ উন্নয়নে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তাকে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্যা আর্থ’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বর্তমানে শেখ হাসিনা তার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য যেভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এটা তিনি তার কাজের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।