২০২৫ সালের মধ্যে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও দুটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণকাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বে-টার্মিনাল প্রকল্পে মাল্টিপারপাস টার্মিনালটি নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি টার্মিনাল পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে বরাদ্দ পাবে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। টার্মিনাল তিনটি বাস্তবায়ন হলে বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য গত বছরের অক্টোবরে ৬৭ একর জমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। আরো প্রায় ৮০৩ একর জমি পেতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে জোয়ারের সময় গড়ে চার ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের এবং সর্বোচ্চ ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ বন্দরের জেটিগুলোতে ভিড়তে পারে। প্রস্তাবিত বে-টার্মিনালে বেশি গভীরতা ও বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ দিন-রাত ভিড়ানোর সুযোগ থাকবে।
অন্যদিকে, বে-টার্মিনালের বাইরে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে এক হাজার ২২৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে প্রকল্পটি চালুর সম্ভাবনা আছে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ৬০০ মিটার জেটিতে ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের তিনটি কনটেইনারবাহী এবং ২২০ মিটার দৈর্ঘ্যের ডলফিন জেটিতে একটি তেলবাহী জাহাজ ভিড়ানো সম্ভব হবে।
তাছাড়া মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের ২৮৩ দশমিক ২৭ একর জমি চট্টগ্রাম বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এটি বাস্তবায়ন হলে ডিপ ড্রাফট ভেসেল অর্থাৎ ১৬ মিটার বা তার বেশি গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমন করতে সক্ষম হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বে-টার্মিনাল প্রকল্প, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়বে। বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বেশি গভীরতা ও বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ রাত-দিন ভেড়ানোর সুযোগ থাকবে। ২০২৫ সালের মধ্যে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও দুটি কনটেইনার টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হবে। পাশাপাশি চলতি বছরের জুলাই মাসেই পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালটি চালু হবে। এখানে প্রায় সাড়ে চার লাখ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, কর্ণফুলী নদীর বহিনোঙ্গর থেকে কাপ্তাই ড্যাম পর্যন্ত ‘ডিটেইল হাইড্রোলজিক্যাল অ্যান্ড হাইড্রোলিক স্টাডি ইন কর্ণফুলী রিভার’ শীর্ষক কাজ শেষ করার জন্য ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়ালিংফোর্ড, ইউকে’ কে আমরা নিয়োগ দিয়েছি। এ স্টাডি চলমান আছে। স্টাডি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সহসা আমরা বন্দর জেটিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়াতে পারব।