নওগাঁয় মালবেরি চাষে প্রথমবারেই সাফল্য

থোকায় থোকায় ঝুলছে মালবেরি ফল। পুরো গাছ জুড়েই শোভা পাচ্ছে সবুজ, লাল এবং কালো লম্বাটে ছোট ছোট আকারের অসংখ্য মালবেরি ফল। বিদেশি উচ্চ মূল্যের পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই মালবেরি ফল এখন চাষ হচ্ছে দেশের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয়।

পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন দেশের ৮টি জাত সংগ্রহ করে প্রথমবারেই সাফল্য পেয়েছেন নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র এগ্রো পার্কের উদ্যোক্তা সোহেল রানা। ভালো ফলন দেখে বাণিজ্যিকভাবে এই ফল চাষের পরিকল্পরা করছেন তিনি।

জানা গেছে, মালবেরি গাছের পাতা ডিম্বাকার, চমৎকার খাঁজযুক্ত এবং অগ্রভাগ সূঁচাল। আকারে আঙুরের চেয়ে কিছুটা বড় মালবেরি ফল। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে ফুল আসে এবং মার্চ-এপ্রিলেই ফল পাকে। প্রথম অবস্থায় সবুজ পরে লাল এবং সম্পূর্ণ পাকলে কালো রং ধারণ করে রসালো এবং টক-মিষ্টি। দেখতে খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। প্রতিটি গাছ থেকে ৮-১০ কেজি ফল সংগ্রহ করা যায়। চারা তৈরি এবং খুব সহজেই ছাদে এর চাষ সম্ভব।

উদ্যোক্তা সোহেল রানা বলেন, মালবেরি বিদেশি উচ্চমূল্যের পুষ্টিগুণসম্পন্ন ফল। বিদেশে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে থাকে। বাজারেও ফলটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। নতুন এই ফলটি পরীক্ষামূলকভাবে থাইল্যান্ড, ভারত, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের ৮টি জাত সংগ্রহ করে এই মালবেরি চাষ করেছি। রীক্ষামূলকভাবে প্রতিটা গাছে সাফল্য এসেছে। প্রচুর পরিমাণে ফল ধরেছে।

এ ফল চাষে রোগবালাই এবং উৎপাদন খরচও কম। শুধু জৈব সার দিলে প্রায় সারা বছরই এই ফল পাওয়া যায়। যেহেতু এই মালবেরি আমদানি নির্ভর একটি ফল। তাই বাজারেও মালবেরি ফলের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এই ফল ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের সুপার শপগুলোতে বিক্রি হয় প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা কেজি দরে।

বাণিজ্যিকভাবে চাষের উদ্যোক্ত নিয়ে সোহেল রানা বলেন, চারটি জাত পছন্দ করেছি। চারা তৈরি করে এক বিঘা জমিতে ৪০০টি গাছ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবো। নতুন জাতের এ ফল দেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখতে আসছে। গাছে পাতা থেকে ফলই বেশি। যদি বাণিজ্যিকভাবে এই মালবেরি ফলের চাষ করতে পারি তাহলে স্থানীয়ভাবে পুষ্টির যোগান দেওয়ার পাশাপশি সারাদেশে এর বাজারজাত করা যাবে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবো।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ বলেন, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সোহেল রানার সুনাম রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিভিন্ন ফল, ফুল, আমসহ নানা ধরনের বাগান করছেন। সম্প্রতি আট জাতের মালবেরি পরীক্ষামূলকভাবে লাগিয়েছে। গাছ থেকে ফল তোলার উপযোগী হয়েছে। মাটিও মালবেরি চাষের উপযোগী। এছাড়া বাড়ির ছাদে টবেও এর চাষ করা যাবে। জেলায় মালবেরি চাষ যেন আগামীতে বৃদ্ধি পায় জন্য চাষিদের নিয়ে প্রশিক্ষনের উদ্যোগ নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।