পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে চিভ নামে এক ধরনের পাতা উদ্ভাবন করেছেন কৃষি গবেষকরা। চিভ হলো মসলার একটি জাত। স্বাদ ও পুষ্টি গুণে কোন অংশেই পেঁয়াজের চেয়ে কম নয় এই চিভ। কৃষি গবেষকরা বলছেন, দেশে পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে চিভ গ্রহণযোগ্যতা পেলে কমবে আমদানি নির্ভরতা।
প্রায় চার বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে বছরজুড়ে চাষ ও ফলনের উপযোগী বারি চিভ-১ নামে মসলার একটি উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়। জাতটি ২০১৭ সালে অবমুক্ত হয়। চিভের স্বাদ দেশীয় মসলা পেঁয়াজ-রসুনের মতো। কৃষি গবেষকরা আশা করছেন শিগগিরই দেশে বাণিজ্যিকভাবে চিভের চাষ শুরু হবে।
গবেষকরা বলছেন, পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে চিভ ব্যবহার করা যাবে। ফলে ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি পেঁয়াজের দামও স্বাভাবিক থাকবে বাজারে। পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকাগুলোতে যেমন রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, মেহেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ীতে চিভ চাষের সম্ভাবনা আছে। প্রতি হেক্টরে ১০-১২ টন চিভ উৎপাদন হয়। সারা বছরই চিভের চাষ করা যায়। তবে উপযোগী সময় হলো এপ্রিল-মে মাস। চারা রোপনের ৭০-৭৫ দিন পরই গাছ থেকে ফসল (পাতা) সংগ্রহ করা যায়। গাছের গোড়া থেকে ২-৩ ইঞ্চি ওপরে পাতা কেটে ফসল সংগ্রহ করতে হয়। চারা একবার রোপন করলে বছরে চার থেকে পাঁচবার ফসল পাওয়া যায়।
তারা আরো জানান, মসলা ফসল হিসেবে চিভ স্যুপ ও সালাত তৈরিসহ বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ব্যবহৃত হয়। একই সঙ্গে চিভের পাতা, কন্দ ও অপরিপক্ক ফুল সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহতৃ হয়। চিভ হজমে সাহায্য ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এতে ক্যানসার প্রতিরোধী গুণাগুণও আছে।
দীর্ঘদিন গবেষণা শেষে চিভ নিয়ে সাফল্য পান কৃষিবিজ্ঞানী ড. মো. নুর আলম চৌধুরী। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জে অবস্থিত মসলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ পেঁয়াজে অভ্যস্ত। পেঁয়াজের পাশপাশি বিকল্প হিসেবে মসলা জাতীয় ফসল চিভের ব্যবহার শুরু করতে হবে। তাহলে পেঁয়াজের ওপর চাপ কমবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চিভের চাষ হচ্ছে। শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে কৃষক পর্যায়েও চিভের চাষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।