জামালপুরের বকশীগঞ্জে চলতি মৌসুমে আলু চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। আলুর ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জানা যায়, বকশীগঞ্জ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নেই আলু চাষের জন্য ব্যাপক উপযোগী। বিশেষ করে বগারচর, বকশীগঞ্জ সদর , সাধুরপাড়া, মেরুরচর ইউনিয়নে আলুর ব্যাপক চাষ করা হয়।
এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আলুর চাষাবাদ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিভিন্ন ইউনিয়নের চাষিরা আলু চাষ করেন। জেলার মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলা আলু চাষের জন্য ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে তাই অর্থকরী ফসল হওয়ায় বিগত কয়েক বছরে এই উপজেলায় আলু চাষে বেশ ঝুঁকে পড়েছেন চাষিরা।
এবার এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করতে ভালো বীজ কেনাসহ ৩০ থেকে ৩৩ হাজার টাকা খরচ হয় কৃষকের। তবে সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মূল্য ও সেচ খরচ বাড়ায় চাষি পর্যায়ে আলু উৎপাদন করতে বাড়তি অর্থ গুণতে হয়েছে। তবুও আলু চাষিরা উৎপাদন বাড়াতে পিছু চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আলু চাষি নুর সাদী ও এনামুল হক জানান, এবছর আলু আবাদ করতে গিয়ে বীজ, সার, কীটনাশক ও সেচ দিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ২৫- ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার প্রতি বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত আলুর ফলন হয়েছে।
জানা যায়, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন মাঠ থেকে আলু মাটির নিচ থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। আলুর উৎপাদনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেলেও দাম নিয়ে রয়েছেন ব্যাপক দুশ্চিন্তায়।
বকশীগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ হাট নঈম মিয়ার বাজারে প্রতি মণ আলু বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। তবে আলুর দাম কম থাকায় হতাশা দেখা গিয়েছে আলু চাষিদের মাঝে।
আলু চাষিরা জানান, ধার দেনা ও গরু বিক্রি করে লাভের আশায় আলু চাষ করেছি কিন্তু এতো কম দামে আলু বিক্রি হওয়ায় খরচের টাকা উঠবে না। ফলন ভালো হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। উপজেলাগুলোতে হিমাগার না থাকায় আলুসহ সবজি জাতীয় পণ্য সংরক্ষণ করা হয় না। ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য কম মূল্যেই বিক্রি করতে বাধ্য হন। তাই সরকারিভাবে আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে চাষিদের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন পাবে আলু চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর আজাদ জানান, আলু চাষ লাভজনক হওয়ায় অর্থকরী ফসল হিসেবে আলু চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। লাভের আশায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারো এ এলাকার চাষিরা ব্যাপকভাবে আলুর আবাদ করেছেন। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হয়। যেভাবে ফলন বেড়েছে সেভাবে ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে।