যশোরে নতুন করে আরও ৩৬ হাজার মানুষ সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাল ও আটা কিনতে পারছেন। করোনাকালীন নিম্ন আয়ের মানুষকে সহযোগিতা করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ওএমএসের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে এই চাল-আটা বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ব্যক্তি শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটা কিনতে পারবেন। প্রতি কেজি চাল ৩০ ও আটা ১৮ টাকায় নিতে পারছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ফলে, অধিক দামে চাল-আটা কেনার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। তার উপর চাল-আটার দাম ঊর্ধ্বমুখী। এই অবস্থা বিবেচনা করে সরকার বিশেষ ওএমএস চালু করেছে। গত ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বিশেষ ওএমএসের আওতায় চাল-আটা বিক্রি।
তবে এটি উপজেলা পর্যায়ের পৌরসভাগুলোতে হচ্ছে। যশোরের সাত উপজেলার সাতটি পৌরসভায় নতুন করে চাল-আটা বিক্রি করছেন ডিলাররা। ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় চারজন ডিলার প্রতিদিন একটন করে চাল ও একটন করে আটা বিক্রি করছেন। আর ‘খ’ এবং ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভায় প্রতিদিন তিনজন ডিলার একটন চাল ও একটন আটা বিক্রি করতে পারছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু জানিয়েছেন, যশোর পৌরসভা বাদে জেলায় ‘ক’ শ্রেণির চারটি, ‘খ’ শ্রেণির দু’টি ও ‘গ’ শ্রেণির একটি পৌরসভা রয়েছে। ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হচ্ছে, নওয়াপাড়া, বেনাপোল, মণিরামপুর ও কেশবপুর। ‘খ’ শ্রেণির পৌরসভার মধ্যে রয়েছে ঝিকরগাছা ও চৌগাছা। এবং বাঘারপাড়া পৌরসভা হচ্ছে ‘গ’ শ্রেণির।
সাতটি পৌরসভায় প্রতিদিন দুশ’ করে মানুষ চাল-আটা কিনতে পারছেন। সেই হিসেবে সাতটি পৌরসভায় প্রতিদিন কিনছেন ১৪শ’ নিম্ন আয়ের মানুষ। মাসের ২৬ দিনে ৩৬ হাজার মানুষ স্বল্প দামের এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন।
বর্তমানে বাজারে মোটা চাল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও এই দর আরও বেশি। আর আটা বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে শুরু করে ৪০ টাকা কেজি দরে। সেখানে ওএমএসের মাধ্যমে চাল ৩০ ও আটা ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে সরকার।
এতে করে প্রতি কেজি আটায় ১২ থেকে ২২ এবং প্রতি কেজি চালে ১২ থেকে ১৫ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে, অনেক খানিক উপকৃত হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। স্বল্পমূল্যের চাল-আটা কিনতে প্রতিদিন শ’শ’ মানুষ ভিড় করছে ওএমএস ডিলারের দোকানে। ডিলাররা জানিয়েছেন, স্বল্পমূল্যের চাল-আটা কিনতে প্রতিদিন তিন-চারশ’ মানুষ লাইনে দাঁড়ান। কিন্তু তারা দুশ’র বেশি মানুষকে দিতে পারছেন না।
এ বিষয়ে যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, ‘বিশেষ ওএমএসের মাধ্যমে জেলার আটটি পৌরসভায় চাল-আটা বিক্রি করা হচ্ছে। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ব্যাপক উপকারে আসছে। বাইরে যেখানে ৪০-৪২ টাকায় চাল এবং ৩২ টাকায় আটা বিক্রি হচ্ছে সেখানে ৩০ টাকায় চাল ও ১৮ টাকায় আটা কেনা অনেক সাশ্রয়। এটি খেটে খাওয়া মানুষের জন্য অনেক। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশেষ এই ওএমএস চলবে।’
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারির আগে কেবলমাত্র যশোর পৌরসভায় ওএমএস চালু ছিল।