পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভবিষ্যতে পুলিশে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবট, ড্রোন ইত্যাদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হবে। পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ এর চতুর্থ দিনে দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ অডিটোরিয়াম, রাজারবাগ, ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে পুলিশের আধুনিকায়নে বিভিন্ন ইউনিট থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয়। সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সভায় অতিরিক্ত আইজি, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার পুলিশ সুপার অংশগ্রহণ করেন। আইজিপি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সম্মেলন শেষে ডিআইজি (অপারেশন্স ও মিডিয়া অ্যান্ড প্লানিং) মোঃ হায়দার আলী খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, সন্ত্রাস মোকাবেলা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশ পুলিশকে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী জনবান্ধব ও পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পুলিশের আধুনিকায়ন প্রয়োজন। পুলিশের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডে বিট পুলিশিং কার্যালয় স্থাপন, সাইবার অপরাধ দমনে স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট প্রতিষ্ঠা, দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার সুবিধার্থে আলাদা মেডিকেল সার্ভিস গঠন, অনলাইন জিডি আরও সহজতর ও বিস্তৃত করা, জনগণের আইনি সহায়তা আরও সুগম করার লক্ষ্যে সার্কেল অফিসের কার্যক্রম বেগবান করা, পুলিশ সদস্যদের আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, ২০৪১ সালের উপযোগী করে হাইওয়ে পুলিশকে গড়ে তোলা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
মাদক সংশ্লিষ্টতায় চাকরি হারিয়েছেন ৩৭ পুলিশঃ পুলিশই প্রথম ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশ সদস্যদের যাকেই সন্দেহ হয়েছে তারই ডোপ টেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হয়েছে। ডোপ টেস্টে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩৭ পুলিশ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বুধবার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২২ এর চতুর্থ দিনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশনস মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) মো. হায়দার আলী খান এসব কথা বলেন।
পুলিশকে মাদক থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে আলোচনা ও কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মো. হায়দার আলী খান বলেন, অভিযোগ উত্থাপিত হলে অথবা যেকোনো সময় সেটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। একই সঙ্গে পুলিশের বিভাগীয় ব্যবস্থা চালু থাকে এবং নিয়মিত মামলা হয়। সুতরাং যেকোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
পুলিশই দেশে প্রথমবারের মতো ডোপ টেস্ট চালু করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের অন্য কোনো বিভাগ আমাদের মতো সেভাবে ডোপ টেস্ট চালু করতে পারেনি। অর্থাৎ কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি পুলিশে যোগদান করে কিনা তা আমরাই প্রথম যাচাই শুরু করি। পরবর্তীতে প্রতিনিয়ত এই ডোপ টেস্ট করা হয়ে থাকে। কেউ যদি ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।