আর দশটি ভবনের মতোই উঁচু হয়ে দাঁড়াবে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ভবন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহেই এ হাসপাতাল ১০০ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার পরিকল্পনা। এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে ছয় তলা। প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ১২ তলার এ ভবন।
প্রায় ১৮ লাখ মানুষের কথা ভেবে এ হাসপাতালে থাকবে আধুনিক সব সুবিধা। ভবনটির কাজ শেষ হলে রোগীদের আর ঢাকা-চট্টগ্রাম কিংবা দেশের বাইরে যেতে হবে না। এতে সময়ের পাশাপাশি বাঁচবে টাকাও। তবে পুরো ভবনটি দৃশ্যমান না হলেও ছয়তলা দেখেই প্রাণ জুড়াচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। মনে জাগাচ্ছেন আশার প্রদীপ।
লক্ষ্মীপুর ১০০ শয্যার হাসপাতাল উন্নীতকরণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। আর এ দাবি একনেকে তোলেন লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের এমপি এবং সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ ১০০ শয্যার হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই দিন লক্ষ্মীপুর সফরে জেলা স্টেডিয়ামে জনসভা শুরুর আগে ২৭টি প্রকল্পের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সরকারের গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ভবনটির নির্মাণ ব্যয় ৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ধরা হলেও বর্তমানে প্রাক্কলন বেড়ে ৪০ কোটি টাকা করা হয়েছে। আর দ্রুত গতিতেই এগিয়ে চলছে ভবনটির নির্মাণকাজ। এছাড়া নানা সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়েও চলছে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। জেলার পাঁচটি উপজেলা থেকেই প্রতিদিন আসছেন রোগীরা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, করোনার মধ্যেও প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে ২৫০০-৩০০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রতিদিন জরুরি বিভাগে ২০০-২৫০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এর সঙ্গে যোগ হয় নতুন রোগীও। রোগীর চেয়ে শয্যা সংখ্যা কম হওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।
রোগীদের স্বজনরা জানান, সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এলে প্রায় সময় দীর্ঘ লাইন ধরে চিকিৎসা নিতে হয়। কোনো রোগী ভর্তি করালে মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিতে হয়। এখন আড়াইশ শয্যা হাসপাতাল হলে কোনো লাইন ছাড়াই সুন্দরভাবে চিকিৎসা নেয়া যাবে। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স, আয়া, ব্রাদার, সুইপার, ঝাড়ুদার, দারোয়ানসহ বিভিন্ন পদের সংখ্যা ১৬৫টি থাকলেও এখনো শূন্যপদ রয়েছে ৭৬টি। তবে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হলে এসব ভোগান্তি লাঘব হবে।
লক্ষ্মীপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজান আনোয়ার বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটির নির্মাণকাজ আগামী বছরের জুনে শেষ করার কথা রয়েছে। তবে দ্রুতগতিতে কাজ চলার কারণে এপ্রিলেই শেষ হবে বলে আশা করছি। সেই লক্ষ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় এমপি একেএম শাহজাহান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যা বলেন, তাই করেন। এর প্রমাণ হলো ২৫০ শয্যার নির্মাণাধীন হাসপাতাল। মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করি। তিনি অনুমোদনও দিয়েছেন। আর এখন দৃশ্যমান হচ্ছে সেই স্বপ্ন।