রামপাল বিদ্যুৎকন্দ্রে উৎপাদন শুরু হবে ১৬ ডিসেম্বর

দেশে বহুল আলোচিত-সমালোচিত কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুেকন্দ্রে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে উত্পাদন শুরু হচ্ছে। সুন্দরবন থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ কেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে প্রায় এক যুগ ধরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই প্রকল্প কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়সীমার প্রায় দ্বিগুণ সময় পার করে বাগেরহাটের রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ বিদ্যুেকন্দ্র চালু হতে যাচ্ছে।

২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি বাগেরহাটের রামপালে এই কয়লাভিত্তিক বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণে দুই দেশের সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুত্ কোম্পানি (বিআইএফপিসিএল)। এতে সমান অর্ধেক করে মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এবং ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি)। বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণে ঠিকাদার কোম্পানি ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড (ভেল) কাজ করছে।

কেন্দ্রের নির্মাণ অগ্রগতি সম্পর্কে বিআইএফপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আবছার উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিদ্যুেকন্দ্রটির দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিটে উৎপাদন চালু হবে ১৬ ডিসেম্বর। এর কাজ প্রায় ৮৫ ভাগ শেষ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ইউনিটে উত্পাদন শুরু হবে এর ছয় মাস পর জুন মাসে। প্রতি ইউনিটের উত্পাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্। তিনি জানান, বিদ্যুত্ উত্পাদনের কয়লা আমদানির জন্য পৃথক দুটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিদ্যুত্ উত্পাদনের জন্য প্রথম ধাপে ৩ লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানির জন্য দরপত্র গ্রহণ শেষে মূল্যায়ন চলছে। এ কয়লা ডিসেম্বরের আগেই দেশে আসবে। আর দ্বিতীয় দফায় তিন বছর মেয়াদে ৭২ লাখ টন কয়লা আমদানি করা হবে। এ কয়লার আবেদন গ্রহণ শেষে শিগিগরই মূল্যায়ন শুরু করা হবে। দুই দরপত্র অনুযায়ী নির্বাচিত ঠিকাদারকে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার কয়লা সরবরাহ করতে হবে।

পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির রামপাল কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা পুড়বে। কেন্দ্রটি থেকে উত্পাদিত বিদ্যুতের দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে নির্মাণ ঠিকাদারের কাজে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা (প্রায় ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার)। দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী এই ঋণ সংগ্রহ করেছে নির্মাণ ঠিকাদার। ভারতের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঠিকাদার ভেল এই ঋণ নিয়েছে। ২০১৭ সালে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।