৩৩৩ নম্বরে কল করে খাবার পেয়েছে ১৬ হাজারের বেশি পরিবার

নোয়াখালীর কবিরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর আলীপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। করোনা মহামারির কারণে কাজকর্ম অনেকটাই বন্ধ। আয়-রোজগার নেই বললেই চলে। এমন অবস্থায় ঘরে চার মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে কষ্টে কাটছিল তার দিন। টেলিভিশনের পর্দায় দেখেন, করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া কেউ খাদ্যসহায়তা চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে কল করলে খাদ্যসামগ্রী বাড়িতে পৌঁছে যাবে।

নুরুল আমিন অনেকটা কৌতূহলী হয়েই ওই নম্বরে কল দেন দিন সাতেক আগে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তার নাম-ঠিকানাসহ সব তথ্য নেওয়া হয়। এরপর কয়েক দিন আর কেউ যোগাযোগ করেননি। এর মধ্যে ৮ আগস্ট কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তার তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে খাদ্যসহায়তা দেন।

নুরুল আমিন বলেন, খাদ্যসহায়তার প্যাকেটে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি লবণ ও ১০০ গ্রাম করে হলুদ ও মরিচের গুঁড়া। এ সহায়তা পেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কয়েকটা দিন অন্তত স্বস্তিতে থাকতে পারছেন বলে জানালেন তিনি। প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

শুধু কবিরহাটের নুরুল আমিনই নন, ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্যসহায়তা পেয়েছে জেলার ১৬ হাজার ৩১০টি পরিবার। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ২২ হাজার ৯৭টি পরিবার খাদ্যসহায়তা চেয়ে ৩৩৩ নম্বরে কল করেছেন।

একই উপজেলার চরজব্বর এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৬। তিনি একটি দোকানে চাকরি করতেন। করোনা মহামারিতে দোকান বন্ধ, তাই আয়-রোজগারও বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে কারও কাছে হাত পাতাও সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে নিজের ফোন থেকে কল করেন ৩৩৩ নম্বরে। কয়েক দিন পরই উপজেলা থেকে তাঁকে কল করে উপজেলা পরিষদে যেতে বলা হয়। যাওয়ার পর তাকে একটি খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট দেওয়া হয়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩৩৩ নম্বরে কল করে জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি কবিরহাটের ৩ হাজার ৯৬৭টি পরিবার সহায়তা পেয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলার ৩ হাজার ৫০২, সুবর্ণচরের ২ হাজার ৮৩৩, সোনাইমুড়ীর ২ হাজার ২৫৩, কবিরহাটের ৮৪১, চাটখিলের ৬৯১, সেনবাগের ৫৯৭ ও হাতিয়ার ৫৮৩টি পরিবার সহায়তা পেয়েছে।