জলাবদ্ধতা দূরীকরণে কাউন্সিলরের ‘বোতল ডাস্টবিন’

চারপাশে ঐতিহাসিক স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ স্পটের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায়ই ভিড় থাকে সর্বস্তরের মানুষের। সাধারণ দিনে লোক সমাগম কম হলেও ছুটির দিনে তা বেড়ে যায় বহুগুণে।

টিএসসি, হাকিম চত্বর, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর, বটতলা, অপরাজেয় বাংলা, ফুলার রোড়, কার্জনে বসে ছোট ছোট গল্প, আড্ডার আসর। এসব আড্ডার ইতিবাচক দিক থাকলেও প্রায়ই জমায়েত শেষে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য (পানির বোতল, আইসক্রিম কাপ) যেখানে সেখোনে ফেলা হয়। বৃষ্টির দিনে সেসব বর্জ্য ড্রেনে আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সংশ্লিষ্টদের। তবে এবার প্লাস্টিক বর্জ্য নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ।

লোহার গ্রিল দিয়ে (দেখতে প্লাস্টিক বোতলের মতো) বড় আকারের বড় বোতল আকৃতির ডাস্টবিন বানিয়েছেন তিনি। যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার অনুরোধ জানিয়ে লেখা হয়েছে, বোতলের ভিতর প্লাস্টিক বর্জ্য ও বোতল রাখুন, জলাবদ্ধতা দূর করুন। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বসানো হয়েছে এরকম দু’টি ডাস্টবিন। যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলছেন অনেকে। কেউ কেউ নির্দিষ্ট জায়গায় না ফেলে নিচে রেখে চলে যাচ্ছেন।

উদ্যোগের বিষয়ে কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকার প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমি এটি করেছি। মানুষ যেন সচেতন হয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে জলাবদ্ধতা দূর করতে সহযোগিতা করে। আমাদের জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে। সবাই যদি এটি ব্যবহার করে তাহলে উদ্যোগটি সফল হবে।

তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ বাংলামোটর, শাহবাগ ও পরিবাগে সর্বমোট আটটি এরকম বোতল ডাস্টবিন বসানো হবে। এর মধ্যে শাহবাগে যেটি থাকবে সেটি চারদিকে প্রদক্ষিণ (ভ্রাম্যমাণ) করবে। সিটি করপোরেশনের দু’জন লোক সেটি নিয়ে টিএসসি জগন্নাথ হল ফুলার রোড় হয়ে ক্যাম্পাসের সবখান থেকে প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করবে।

খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, প্রতি বোতলে প্রায় ৮০ কেজি লোহা লেগেছে। এছাড়া রংসহ সব মিলিয়ে খরচ পড়ছে বোতলপ্রতি ২০ হাজার টাকা করে।

কাউন্সিলরের এমন উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আরমান উদ্দিন বলেন, এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। এখন আমাদের এটি ভালোভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইমদাদ। তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি এমন সব উদ্যোগ। এর আগে মেয়রের উদ্যোগে যেসব ডাস্টবিন দেওয়া হয় সেটি সফল হয়নি। এই বোতল ডাস্টবিনে ব্যবহারে অনেক আগ্রহ দেখা গেলেও অনেকে এর বাইরে ময়লা ফেলছেন। সেজন্য এটি কতটুক সফল হয় সেটা সময়ই বলে দেবে।

তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ