প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেও থেমে নেই মেট্রো রেলের কাজ। মেট্রো রেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬১.৪৯ শতাংশ। এর প্রথম অংশ উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে আগারগাঁওয়ের অগ্রগতি ৮৩.৫২ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের অগ্রগতি ৫৭.৬৮ শতাংশ। এ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি চালুর আশা করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সম্প্রতি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।
মেট্রো রেল পরিচালনায় গঠিত ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন সিদ্দিকী সম্প্রতি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমারা আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা উত্তরা-আগারগাঁও অংশের কাজ শেষ করে ট্রেন চলাচল শুরু করতে পারব। এটি এমন একটি প্রকল্প, যেটির মেয়াদ ও ব্যয় বাড়াতে হচ্ছে না। এখনো সঠিক পথেই চলছে মেট্রো রেল প্রকল্পটি। করোনা তেমন প্রভাব ফেলছে না এই প্রকল্পে, আমরা কাজ করে যাচ্ছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে।’
ফাস্ট ট্র্যাক অগ্রগতি প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এগিয়ে চলছে মেট্রো রেলের কাজ। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। ২০১২ সালের জুলাই থেকে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে। শুরু থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের আওতায় ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৩৯৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী এলাকায় মেট্রো রেলের ডিপোতে প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে তৈরি হচ্ছে ৫২টি স্থাপনা। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর কাজও ৮০ শতাংশ শেষ। এ ছাড়া ট্রেন পরিচালনার জন্য এক হাজার ৫০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ রিসিভিং স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বিশাল আকারের ওয়ার্ক স্টেশন। এখানে ট্রেনগুলো চলাচলের পর প্রতিদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর ত্রুটিমুক্ত করেই ফের চলবে লাইনের ওপর। এই ওয়ার্ক স্টেশনে একসঙ্গে ২৪টি ট্রেন মেইনটেন্যান্সের ব্যবস্থা থাকবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পিয়ারের ওপর সর্বশেষ ভয়াডাক্ট স্থাপনও শেষ হয়েছে। ভায়াডাক্টের ওপর রেললাইন বসানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে। সর্বাধুনিক সুবিধাসংবলিত স্টেশনগুলোর কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। এদিকে মেট্রো রেলের ছয়টি বগির একটি চালান মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। আরো আসবে ১৩৮টি বগি।
মেট্রো রেলের ট্রেনের একেকটি বগিতে ৫৪ জনের বসার ব্যবস্থা থাকবে। পিক সময়ে বসে এবং দাঁড়িয়ে মিলে মোট দুই হাজার ৩০৮ জন যেতে পারবে একটি ট্রেনে। স্বাভাবিক সময়ে এক হাজার ৭৩৮ জন যাতায়াত করতে পারবে। প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য থাকবে একটি করে বিশেষ বগি।