মরুভূমির খেজুর চাষে স্বপ্ন দেখছেন তাজুল

মরুভূমির উত্তপ্ত আবহাওয়ায় উৎপাদিত ফলকে দোআঁশ মাটিতে চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের চর কাশিমনগর কৃষক তাজুল ইসলাম। এ লক্ষ্যে দুই বিঘা জমিতে বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। সাড়ে চার বছর আগে করা এ বাগানের অনেক খেজুর গাছে এখন ফুল-ফল ধরেছে।

সৌদি খেজুরের বাগান দেখে এ অঞ্চলের অনেক বেকার যুবক এখন খেজুর চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। বাগান ঘুরে অনেকেই ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং পুরুষ স্ত্রী গাছের ঝুঁকি এড়াতে ও এ চাষ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দিতে বিদেশ থেকে টিস্যু কালচার পদ্ধতির চারা আনার কথা বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

২০০০ সালে দুবাই গিয়ে প্রায় ১৬ বছর খেজুর বাগানে কাজ করেন তিনি। অভিজ্ঞতা, পদ্ধতি আর অর্থ উপার্জনের পর বিভিন্ন জাতের খেজুর বীজ নিয়ে দেশে ফিরে আসেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চর কাশিমনগরের মধ্যবয়সী আবুল হোসেন। গ্রামে ফিরে ২০১৬ সালে নিজের বাড়ির পাশে সৌদি খেজুরের বাগান তৈরির কাজ শুরু করেন। সাড়ে ৪ বছরে গাছগুলো বড় হয় এবং ফুল দিতে শুরু করে। অনেক গাছে এখন ফলও ধরেছে।

তার বাগান ঘুরে দেখা যায়, বেশ কিছু খেজুরগাছে ফল ও ফুল ধরেছে। পার্শ্ববর্তী কয়েক খণ্ড জমিতে নতুন করে চারা রোপণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তাজুল ইসলাম জানান, দুবাইয়ে মালিকের খেজুরের বাগানে কঠোর পরিশ্রমকালে মনে মনে স্থির করি এখান থেকে বীজ নিয়ে নিজে একটি বাগান করবো। আমার বাগান দেখে অন্যরাও বাগান তৈরি করে বেকারত্ব দূরীকরণের পাশাপাশি স্বাবলম্বী হবে। তবে এখনো অনেক গাছে ফুল আসেনি। হয়তো অনেকগুলো পুরুষ গাছ হতে পারে। সেজন্য বাকি আরো এক বিঘা জমিতে টিস্যু কালচার চারা রোপণ করব। আমার বাগান দেখে অনেকে উৎসাহিত হয়ে চারা নিচ্ছে এবং বাগান করছে।

স্থানীয় কৃষক আসাদ মিয়া জানান, তাজুল ইসলাম বিদেশ থেকে এসে সৌদি খেজুরের বাগান করা দেখে প্রথমে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। অনেকে তাকে নিয়ে হাসাহাসি, মসকরা করতো। এখন তার পরামর্শে অনেকে খেজুর বাগান শুরু করেছে।

বিন্নাবাইদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. গোলাম মোস্তফা গোলাপ বলেন, তাজুল ইসলামের এ উদ্যোগ আমাদের ইউনিয়নের অনেকের কাছে অনুকরণীয়। আশা করছি তার উৎপাদিত খেজুর দেশের চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। পাশাপাশি তাকে অনুসরণ করে এলাকার কর্মক্ষম বেকার যুবকরা সৌদি খেজুরের বাগান তৈরির মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিম উর রউফ খান বলেন, এখানকার মাটি খেজুর চাষের উপযোগী। আমরা খেজুর চাষের জন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা তাকে পুরুষ গাছের ঝুঁকি এড়াতে টিস্যু কালচার চারা চাষ করার পরামর্শ দিয়েছি। তাজুল ইসলামকে দেখে আরো অনেকে এ বাগান করায় উৎসাহিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

আজওয়া, আমবাগ, বারহী, মেঘজল, আম্বর এবং বকরী জাতের সৌদি বাহারি খেজুর গাছের বাগান দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থী ও উৎসুকদের আনাগোনা দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

তথ্যসূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ