জয়পুরহাট সদর উপজেলার জামালপুরে স্ট্রবেরি চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক কৃষক এখন সচ্ছল। জয়পুরহাটে উৎপাদিত স্ট্রবেরি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগের তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
১২ বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছেন কৃষক আমজাদ হোসেন। এ ফলের চাষ সম্পর্কে জানতে চাইতে তিনি বলেন, স্ট্রবেরির একটি চারার দাম ২০ টাকা। এক বিঘা জমিতে পাতলা করে চারা লাগালে ৪/৫ হাজার চারা লাগে। এতে আমাদের প্রায় এক লাখ টাকার মতো খরচ হয়। এক লাখ টাকা খরচ করে তিন লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করি।
তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা কোনো সহায়তা পাই না। ১২/১৩ বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছি। কৃষি বিভাগের লোকজন এসে ঘুরে চলে যায়। আমাদের কোনো উপকার হয় না। কৃষি বিভাগ বা সরকারিভাবে সহায়তা পেলে আমরা উপকৃত হতাম।
জমিতে কাজ করছিলেন হাসিনা বেগম নামে এক নারী। কাজ করতে করতে তিনি বলেন, ‘আমি মাসুদের খেতে ২৫০ টাকা মজুরিতে কাজ করছি। স্ট্রবেরি চাষ হওয়ায় আমাদের কাজের সুযোগ হয়েছে। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারছি।
জমিতে ওষুধ দিচ্ছিলেন কৃষক সুমন হোসেন। তিনি বলেন, ৪ থেকে ৫ বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছি। এটি লাভজনক ফসল। এখানে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ করলে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। স্ট্রবেরিতে ছত্রাক আক্রমণ করলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। ঢাকায় স্ট্রবেরি পাঠাতে চায়। কিন্তু যাতায়াতের ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। বিভিন্ন জায়গায় চেকিং সমস্যা হয়। অনেক সমস্যা পার করে মালামাল পাঠাতে হয়।
কৃষক নাসির উদ্দিন বলেন, ৫০ শতক জমি থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ কেজি স্ট্রবেরি তুলি। ঢাকার আড়তে এসব স্ট্রবেরি পাঠানো হয়। বর্তমানে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। পনের দিনে প্রায় ৭৫ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। আরও একমাস বিক্রি হবে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কায়ছার ইকবাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, কৃষকদের নিজ উদ্যোগে এ বছর সদরের জামালপুর এলাকায় ৬ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি অফিসারসহ আমরা নিয়মিত তাদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। এটি একটি লাভজনক ফসল।
তথ্যসূত্র: ঢাকাপোস্ট