শখের ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষে সাফল্য

শখের বসে বাড়ির পাশের তিন শতক পতিত জমিতে ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষ করেন রাজশাহীর সোহেল রানা। মাস্টার্স পাসের আগে মাত্র তিন হাজার টাকা খরচ করে সেই ফুল বিক্রি করেছেন আট হাজার টাকায়। প্রথমবার সাফল্য পেয়েই উৎসাহ বাড়তে থাকে তার। সেই থেকে ফুল চাষের পরিকল্পনা করেন তিনি। এখন সেই শখের ‘গ্লাডিওলাস’ চাষ করেই বেকারত্ব জয় করেছেন সোহেল রানা।

সোহেল রানার বাড়ি বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার হামিদকুড়া গ্রামে। নিজ বাড়ির পাশের জমিতেই বাণিজ্যিকভাবে ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষ করছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোহেল রানার বাড়ির পূর্বদিকে ‘গ্লাডিওলাস’ ফুলের বাগান। সেই বাগান পরিচর্যায় সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। বাগান দেখভালের রেখেছেন দুইজন শ্রমিক। সোহেল রানার বাগানের ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জেলায়। প্রাথমিকভাবে নিজ জেলার বাইরে নাটোর ও ঈশ্বরদীতে ফুল সরবরাহ করছেন তিনি। গত বছর ডিসেম্বরে বাগানের অর্ধেক ফুল বিক্রি করেছেন ৮০ হাজার টাকায়।

সোহেল রানা বলেন, আমার বাগানের ‘গ্লাডিওলাস’ ফুলের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। জাতীয় দিবস ও বিভিন্ন উৎসবে ফুল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে ২০ শতক জমিতে ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষ করছি। আগামী বছর আরো দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে ফুল বাগান বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে ‘গ্লাডিওলাসে’র পাশাপাশি গাঁদা ও গোলাপ চাষ করবো।

তিনি বলেন, খরচ বাদে ফুল বিক্রি করে প্রতি তিন মাসে আয় হয় দুই লাখ টাকা। ফুল চাষের আয় দিয়েই পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছি। এছাড়া জমি ইজারা নিয়ে অন্যান্য ফসল আবাদ করছি।

দরিদ্র পরিবারের সন্তান সোহেল রানা বলেন, পৈত্রিক সম্পদ বলতে বসতভিটাসহ তিন বিঘা জমি ছিল। জমি চাষ করে বাবার যা আয় হতো তা দিয়েই কোনোরকম সংসার চলতো। ওই সময়ই শখ করে ‘গ্লাডিওলাস’ চাষ করি। ২০১৭ সালে মাস্টার্স পাস করে যখন চাকরি পাচ্ছিলাম না, তখন বেকারত্ব দূর করতে বাণিজ্যিকভাবে ‘গ্লাডিওলাস’ চাষ শুরু করি। বর্তমান প্রতিটি ‘গ্লাডিওলাস’ স্টিক ১২-১৪ টাকায় বিক্রি করছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ‘গ্লাডিওলাস’ ফুল চাষে সোহেল রানাই প্রথম হয়েছে। তিনি সাফল্য পাওয়ায় উপজেলার অনেক বেকার এই ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, সোহেল রানাকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ফুলের পাশাপাশি তার বাগান থেকে ‘গ্লাডিওলাসের’ বীজ ও চারা সংগ্রহ করে অন্যান্য ফুল চাষিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। সৌখিন এ ফুল চাষ করে অল্প সময়েই বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।

তথ্যসূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ