পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি) বলেছে, এটি বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন।
শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মার মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ যে সক্ষম, তা প্রমাণ হয়েছে। কিছু মহলের আশঙ্কা সত্ত্বেও উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আরও মজবুত হবে বলে মনে করে আইসিসিবি।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) প্রকাশিত আইসিসিবির নিয়মিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক এই চেম্বার বলেছে, পদ্মা সেতু চালু হলে বছরে জিডিপিতে প্রায় ১ দশমিক ২ শতাংশ অবদান রাখবে। দারিদ্র্য হ্রাস পাবে। খুলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বিনিয়োগের দরজা।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে এটি সরাসরি বাংলাদেশের প্রধানতম স্থলবন্দর বেনাপোলের সাথে সংযুক্ত করবে। ফলে সামগ্রিকভাবে বদলে যাবে দেশের অর্থনীতি।
গত ১০ ডিসেম্বর প্রমত্তা পদ্মার বুকে শেষ স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মার দুই তীর সংযুক্ত হয়েছে। রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগের পথ খুলে গেছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হবে বলে সরকারি মহল থেকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার পর রাজনৈতিক বাদানুবাদ শেষে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তে নিজেদের টাকায় বাস্তবায়ন করা হয় বিশ্বের ১১তম বৃহৎ পদ্মা সেতু।
এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ৩১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে সেতু বিভাগ জানিয়েছে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগের অভাবে দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চল স্বল্পোন্নত রয়ে গেছে। যে কারণে এই অঞ্চলে দরিদ্র লোক তুলনামূলক বেশি।
আইসিসিবির প্রতিবদনে বলা হয়,পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সাথে সাথে বাংলাদেশ দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের সাথে যুক্ত হবে। এই সেতু যোগাযোগ, বাণিজ্য, শিল্প, পর্যটনসহ অনেক খাতে অবদান রাখবে।
বিশেষত এটি ভুটান, ভারত এবং নেপালের সাথে বাণিজ্য ও পর্যটনের জন্য আরও দ্রুত সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করবে।
পদ্মা সেতু ছাড়াও মেট্রো রেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে ব্রিজসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
আইসিসিবি বলেছে, চলতি বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এমন সময় তা করা হচ্ছে যখন বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে।
উন্নয়নের চলমান গতি ধরে রাখতে হলে উপযুক্ত অবকাঠামো তৈরি অত্যাবশ্যক বলে মনে করে আইসিসিবি। বাংলাদেশকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন এবং একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মনে করে আইসিসিবি।
তথ্যসূত্র: নিউজ বাংলা