উচ্চ ভিটামিনসমৃদ্ধ কেন্টালপ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে উচ্চ ভিটামিন ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ বিদেশি কেন্টালপ ফলের পরীক্ষামূলক চাষ করা হয়েছে।

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামের আদর্শ কৃষক আহসান-উল-হক বাবু তাঁর সাড়ে তিন বিঘা জমিতে এই কেন্টালপ ফলের চাষ করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি পাশের আরো সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ব্ল্যাক বক্স জাতের তরমুজ আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন কৃষক আহসান-উল-হক বাবু। কারণ পরীক্ষামূলক কেন্টালপ ও ব্ল্যাক বক্স জাতের তরমুজ চাষে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। আর সপ্তাহখানেক পরেই এসব ফল বাজারে তোলা যাবে। কিন্তু ফলন ভালো হওয়ার সেই আনন্দ নিরানন্দে পরণিত হয়েছে বাজারজাতকরণ সমস্যার কারণে। চলমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষ এখন ঘরবন্দি। বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে পরিবহনসহ নানা দিকে প্রতিবন্ধকতা। ফলে দিন-রাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম ও পরিচর্যায় ক্ষেতে উৎপাদিত কেন্টালপ ও তরমুজ বাজারজাত নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

জানা গেছে, বাবু মূলত ধান বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এবং একজন আদর্শ কৃষক। তিনি বিভিন্ন ধরনের ফল, ধান, শাকসবজি ও ফসলের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ করতে ভালোবাসেন। তাতে তিনি সফলতাও পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে কেন্টালপ জাতের ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হই। আর ব্ল্যাক বক্স জাতের তরমুজ চাষে ধারণা পাই মেহেরপুর জেলার কৃষকদের কাছ থেকে। পরে কেন্টালপ ও ব্ল্যাক বক্স জাতের তরমুজের বীজ সংগ্রহ করে বপন করি।’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাবুর কেন্টালপ ও তরমুজ ক্ষেতের মাচায় বিভিন্ন আকৃতির শত শত কেন্টালপ ও তরমুজ ঝুলছে। কৃষক বাবু জানান, তাঁর জমিতে কেন্টালপ ও তরমুজ চাষে প্রতি বিঘায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি আশা করেছিলেন, প্রতি কেজি কেন্টালপ অন্তত ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং তরমুজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

এতে তিনি সব মিলিয়ে কয়েক লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু বর্তমান করোনাকালে তিনি তাঁর ক্ষেতের কেন্টালপ ও তরমুজ বাজারে নিতে পারছেন না। তিনি চাষাবাদকৃত কেন্টালপ ও তরমুজ বাজারজাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব দাস বলেন, ‘কৃষক বাবু একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কেন্টালপ চাষে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছি। এখন তাঁর ফসল বাজারজাতকরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লাভবান হবেন। দেশের সাধারণ মানুষও বিদেশি কেন্টালপ ফল খেতে পারবেন। এতে করে মানুষের ভিটামিন ও প্রোটিনের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে আমদানিনির্ভর এ ফল দেশে উৎপাদনের ফলে মানুষের চাহিদা মিটবে এবং বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে।’