পোশাকশিল্পের পর এবার সব আমদানিকারকের জন্য কনটেইনার রাখার ভাড়ায় দ্বিতীয় দফায় ছাড় দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সাধারণ ছুটির সময় আমদানি হওয়া কনটেইনার আগামী ৪ মের মধ্যে খালাস নেওয়া হলে কনটেইনার রাখার ভাড়া দিতে হবে না। গতকাল সোমবার থেকে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে বলে বন্দরের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল সোমবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রথমে শুধু পোশাকশিল্পের মালিকদের সুবিধা দিয়ে এই আদেশ জারি করেছে। এ সময় সবচেয়ে আর্থিক ক্ষতির শিকার হওয়া বাণিজ্যিক আমদানিকারকেরা কোনো ছাড় না পাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়। এরপর আজ মঙ্গলবার আরেকটি আদেশে সব আমদানিকারকের জন্য ছাড় দেওয়া হয়। তবে গতকাল সোমবারের তারিখ দিয়ে আদেশটি জারি করা হয়।
জানতে চাইলে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ আজ মঙ্গলবার বলেন, পোশাকশিল্পের মালিকদের আহ্বানে প্রথমে শুধু তাদের জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তবে এই সুবিধা যাতে সবাই পান সে জন্য বন্দরের অনুরোধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি আমলে নিয়েছে। সবার জন্য ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটির পরদিন ২৭ মার্চ থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি করা সব ধরনের কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ছাড় দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ ছুটির কারণে বেশির ভাগ সংস্থার সেবার আওতা সীমিত করায় পণ্য খালাসে বিলম্বের জন্য এই ছাড় দেওয়া হয়। অবশ্য হঠাৎ করে ২০ এপ্রিলের পর সে সুবিধা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
নতুন করে গতকাল শুধু পোশাক শিল্পের মালিকদের ছাড় দেওয়া হলে তা নিয়ে সমালোচনা হয়। কারণ সাধারণ ছুটির সময় রাজস্ব বোর্ডের নিষেধাজ্ঞার কারণে ২৭ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত একটানা ২৬ দিন বাণিজ্যিক আমদানিকারকেরা পণ্য খালাস করতে পারেননি। যখন কাস্টমস থেকে পণ্য খালাসের সুযোগ দেওয়া হয় তার আগে বন্দরে কনটেইনার রাখার ভাড়ায় ছাড়ের সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছিল। এতে বাণিজ্যিক আমদানিকারকেরা খালাস নেওয়ার আগেই বন্দর ও জাহাজ কোম্পানির ভাড়াসহ প্রতিটি কনটেইনারে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার মতো অতিরিক্ত খরচ যুক্ত হয়েছিল। এ কারণে নতুন করে ছাড়ের সুবিধা তাঁদের দেওয়া উচিত বলে ব্যবহারকারীরা জানান।
জানতে চাইলে বন্দর ব্যবহারকারী প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, শুধু পোশাকশিল্পের পরিবর্তে সবার জন্য ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে। খুব দ্রুত সবার জন্য ছাড়ের সুবিধা দিতে বন্দর চেয়ারম্যানের এই উদ্যোগ ইতিবাচক। এখন কনটেইনার খালাসের হারও বাড়বে।
স্বাভাবিক সময়ে জাহাজ থেকে নামানোর পর চারদিন পর্যন্ত বিনা ভাড়ায় কনটেইনার রাখা যায় বন্দরে। এরপর প্রথম ধাপে প্রতিটি কনটেইনারে ৬ ডলার, দ্বিতীয় ধাপে ১২ ডলার এবং শেষ ধাপে ২৪ ডলার করে ভাড়া দিতে হয়।