গণতন্ত্রের সূচকে ৮ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ [ভিডিও সহ]

ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদন

গণতন্ত্রের সূচকে ২০১৯ সালে অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। আট ধাপ এগিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৮০। এর আগের বছর এই সূচকে ৮৮তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক দ্য ইকোনমিস্ট গ্রুপের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ব্রিটেনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) বার্ষিক গণতন্ত্র সূচকে এবার আট ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। ১৬৫টি দেশ ও দুটি ভূখণ্ড নিয়ে তৈরি করা এ বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ ৮৮তম স্থান থেকে এবার ৮০তম স্থানে উঠে এসেছে। তবে বাংলাদেশ এখনো সংকর শাসনের (হাইব্রিড রেজিম) মধ্যেই রয়েছে।

গত মঙ্গলবার গণতন্ত্র সূচক ২০১৯ প্রকাশ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম কম্পানি দি ইকোনমিস্ট গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। তবে গত এক বছরে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের অবনমন হয়েছে বলে এবারের সূচকে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ২০০৬ সালে গণতন্ত্র সূচক প্রণয়নের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। এবার বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ খ্যাত ভারতও ১০ ধাপ পিছিয়েছে।

বাংলাদেশ সম্পর্কে মূল্যায়ন : প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে সংক্ষিপ্তসারে (সামারি) বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকতে তার বজ মুষ্টি অব্যাহত রেখেছে, পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছে। দলটির তৃণমূলের পৃষ্ঠপোষকতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর ওপর শক্ত কমান্ড বজায় রাখতে পারায় তার শাসনকে আরো শক্তিশালী করবে। এর পরও দেশটির রাজনৈতিক পরিবেশ সামাজিক আন্দোলনের কারণে ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটবে। তবে এসব পরিস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করবে না এবং ২০১৯-২০ সালে দেশটির সম্ভাব্য জিডিপি হবে ৭.৮ শতাংশ।’

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এর আগের বছর, অর্থাৎ গণতন্ত্র সূচক ২০১৮-তে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ দশমিক ৫৭ এবং অবস্থান ছিল ৮৮তম। এবার ৫ দশমিক ৮৮ স্কোর নিয়ে আট ধাপ এগিয়ে ৮০তম স্থানে উঠে আসে বাংলাদেশ। বাংলাদেশসহ আরো কয়েকটি দেশের এমন উন্নতিকে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ বলে মন্তব্য করেছে ইআইইউ।

পাঁচটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে একটি দেশের গণতন্ত্র পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইআইইউ। এগুলো হলো নির্বাচন ব্যবস্থা ও বহুদলীয় পরিস্থিতি, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার। প্রতি সূচকের পূর্ণমান ধরা হয় ২ এবং মোট স্কোর হলো ১০। ফলে ০ থেকে ১০ স্কোরের মধ্যে দেশগুলোর গণতন্ত্র তথা শাসনব্যবস্থার চিত্র উঠে আসে। গণতন্ত্র সূচকে আট ধাপ অগ্রগতি হয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৮০তম। বিশ্বের ১৬৫টি দেশ ও দুটি ভূখণ্ডের এই সূচকে গত বছর ৮৮তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আজ বুধবার স্বনামধন্য ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট সবশেষ গণতন্ত্র সূচক প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ এ সাময়িকীর গবেষণা শাখা ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০০৬ সাল থেকে এই সূচক প্রকাশ করে আসছে।

পাঁচ মানদণ্ডে একটি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১০ ভাগে এই সূচক তৈরি করে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। এগুলো হলো নির্বাচন ব্যবস্থা ও বহুদলীয় পরিস্থিতি, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার। প্রতি সূচকের পূর্ণমান ধরা হয় ২।

তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের আগে আছে। যদিও গেলবারের তুলনায় ভারতের অবস্থান নেমে গেছে ১০ ধাপ। ১৬৫ স্বাধীন দেশ এবং দুটি অঞ্চলের তথ্য যাচাই করে গণতন্ত্র সূচক দেয়া হয়। কোনো দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এবং বহুত্ববাদ, সরকারের কার্যকারিতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক স্বাধীনতার মতো সূচকগুলোর ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা দেয়া হয়। তালিকায় প্রথম অবস্থানে আছে নরওয়ে। আর একদম শেষে উত্তর কোরিয়া। চীন আছে ১৫৩তম অবস্থানে। ২০১৯ সালকে এশিয়ার গণতন্ত্রের জন্য ‘অশান্ত বছর’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বিশাল পরিবর্তন এসেছে থাইল্যান্ডে। অন্যদিকে বিক্ষোভ সহিংসতার ঘটনায় সিঙ্গাপুর, হংকং, ভারত র‍্যাঙ্কিংয়ে নিচের দিকে নেমেছে।