অভিনন্দন লিতুন

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে অদম্য মেধাবী লিতুন জিরা। হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া যে শিশুকে দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন মা-বাবা; সেই মা-বাবার মুখে আজ আনন্দের হাসি। যে প্রতিবেশীরা তার জন্মের সময় মন্তব্য করেছিলেন বিভিন্ন ধরনের তারাও আজ বিস্মিত লিতুনের সফলতায়। আজ প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সবাই তাকে জানাচ্ছে অভিনন্দন, অভিবাদন।
অদম্য এই শিশু এবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছিল। লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা মুখ দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেয়। হুইল চেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে সে। উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে লিতুন জিরা। ফল প্রকাশের পর লিতুন জিরা জানায়, পরনির্ভর হয়ে সমাজের বোঝা হতে চাই না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই। আর ১০ জন মানুষের মতো আত্মনির্ভরশীল হতে চাই।

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর মেয়ের ভবিষ্যত্ নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করেছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোসল সবকিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লেখে। তার চমত্কার হাতের লেখা যে কারো নজর কাড়বে। লিতুনের একটাই ইচ্ছে, পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চায়। তবে কিছুদিন আগে দাদু মারা যাওয়ায় মন খারাপ লিতুনের। দাদু বেঁচে থাকলে তিনি খুব খুশি হতেন বলে জানায় লিতুন জিরা।

প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ২৯ বছরের শিক্ষকতা জীবনে লিতুন জিরার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। শুধু লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো।