বাংলাদেশে উৎপাদিত আলু পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আলুর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, জাপান, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আলু রপ্তানি হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আলু উত্পাদিত হলেও দিনাজপুর, রংপুর, জয়পুরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও জেলায় বেশি পরিমাণ আলু উত্পাদিত হচ্ছে। উত্পাদিত উন্নতজাতের আলুর মধ্যে রয়েছে ডায়মন্ড, গ্রানূলা, কুমারিকা ও সাগিতা জাতের আলু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব আলুর ওজন প্রতিটি ৮০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে। গত কয়েক বছর আগে থেকে আলু রপ্তানি শুরু হয়।
বাংলাদেশের আলুর বড় ক্রেতা ছিল রাশিয়া। কিন্তু বাংলাদেশের আলুর মধ্যে ভাইরাস পাওয়ায় রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে আলু নেওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু সমপ্রতি মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে বেশি পরিমাণ আলু নিচ্ছে। এক তথ্যে জানা যায় ২০১৭ সালে আলুর মৌসুমে বিশ হাজার টন আলু মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হয়েছে। ইদানিং উত্তরবঙ্গে বেশ কিছু উদ্যেক্তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আলু উত্পাদনে নেমেছে। এতে করে আলু চাষিদের মাঝে নতুন করে উত্সাহ দেখা দিয়েছে। আলু চাষিরা জানান, আগে আলু চাষ করে ন্যায্য মূল্য পেতাম না। আলুর চাষ বেড়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। জমি থেকে আলু সংগ্রহের পর আলু বাছাই, গ্রেডিং, ওজন, প্যাকিং, ট্রাকে লোডকরাসহ বিভিন্ন কাজে অনেক লোক নিয়োজিত হচ্ছে। এসব শ্রমিকের মধ্যে নারী শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি।
আলু রপ্তানি হওয়ায় চাষিরা ব্যাপকভিত্তিতে আলু চাষের উদ্যোগ নিচ্ছে। উচ্চফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য উন্নতজাতের আলু বেশি করে চাষ করলে রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে যাবে। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন আলু চাষিরা। আলুর রপ্তানি ক্রমেই বৃদ্ধি করা গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়বে। এতে জাতীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। দেশে আলুর উত্পাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আলু চাষের আওতায় আনতে হবে। দেশের বেকারদেরকে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে জমির বন্দোবস্ত দিতে হবে। এতে করে লাভবান হবে দেশ।