দেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ যে কোনো ধরনের পাখি পালনের জন্য উপযোগী। কিছু প্রাণী আছে যেগুলো পরিবেশের সঙ্গে খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারে। আর টার্কি সেরকম একটি সহনশীল পাখিজাতীয় প্রাণী। মাংসের উৎস হিসেবে হাঁস, মুরগি, কোয়েল, তিথির পরপর টার্কির অবস্থান। তাছাড়া টার্কির মাংস কম চর্বিযুক্ত হওয়ায় অন্যান্য পাখির তুলনায় অনেক পুষ্টিকর। বিশ্বের অনেক দেশে টার্কি পালিত হয়। বহির্বিশ্বের পাশাপাশি বর্তমানে আমাদের দেশেও টার্কি পালন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। টার্কি পালন করে স্বাবলম্বী এবং বেকার সমস্যা দূর করা যাবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
স্বল্প পুঁজি এবং পালন সহজ হওয়ায় টার্কি পালন করে এক বছরের ব্যবধানে লাখপতি হয়েছেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার আশিয়া ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামের বাসিন্দা জেবল হোসেন। মাত্র ১৫ হাজার টাকার পুঁজি দিয়ে শুরু করে তিনি বর্তমানে কয়েক লাখ টাকার মালিক। রোগবালাই কম এবং স্বল্প পুঁজি হওয়ায় টার্কি পালনে ঝুঁকছেন বেকার যুবকরা। এছাড়াও টার্কিতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও আমিষ থাকায় এর চাহিদাও দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেবল হোসেনের মতো অন্যরাও এগিয়ে এলে টার্কি পালন ও সরবরাহ বাণিজ্যিক আকারে রূপ নেবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
জেবল হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। প্রবাসী ছেলে আলী আকবর সুজনের পরামর্শে এক বছর আগে তিনি ১০ হাজার টাকার স্বল্প পুঁজিতে টার্কি পালন শুরু করেন। ১০টি টার্কির বাচ্চা দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে বাচ্চাসহ শতাধিক টার্কি রয়েছে তার খামারে। বিগত ছয় মাসে টার্কির ডিম বিক্রি করেছেন প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তবে টার্কির বাচ্চা বিক্রি করেছেন এর চেয়েও বেশি। প্রায় দেড় লাখ টাকার টার্কির বাচ্চা বিক্রি করেছেন।
জেবল হোসেনের গ্রামের বাড়ি বাথুয়ায় চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে টার্কির টিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করার জন্য লোকজন আসেন। জেবল হোসেন জানান, তার প্রবাসী ছেলে আলী আকবর সুজনের পরামর্শে তিনি টার্কি পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার দুটি খামারে শতাধিক টার্কি পাখি রয়েছে। ১০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করে বর্তমানে কয়েক লাখ টাকার মালিক তিনি। তিনি বলেন, বেকার যুবকরা টার্কি পালন করে কর্মসংস্থান করার পাশাপাশি স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ আছে। টার্কির মাংস কম চর্বিযুক্ত হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
আশিয়া বাথুয়া গ্রামের বাসিন্দা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সেলিম মোস্তফা জানান, সরকারিভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হলে টার্কি বাণিজ্যিক আকারে রূপ নেবে। এতে জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা সহজ হবে। জেবল হোসেন যেভাবে টার্কি পালনে এগিয়ে এসেছেন, বেকার-যুবকরা তাকে অনুসরণ করেই নিজেদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেন।