রংপুরে ঈদবাজার এবার ৩শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলনেরও একই মত। তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এবার ঈদে স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছে। এ কারণে মার্কেটগুলো এবার পোশাক বিক্রিতে রেকর্ড করবে।
গতকাল মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, বিপণিবিতানগুলো সেজেছে নানা সাজে। অনেক মার্কেটে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য আলোকসজ্জা করা হয়েছে। নানা বয়েসী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে শপিংমলগুলো। নগরীর জেলা পরিষদ সুপারমার্কেট, জাহাজ কোম্পানি মোড়, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মার্কেট, রাজা রামমোহন মার্কেট, মতি প্লাজা, সিটি প্লাজা, রজনীগন্ধা মার্কেট, নবাবগঞ্জ বাজার মার্কেটে ক্রেতার ভিড় লেগেই আছে। এসব মার্কেটে মানভেদে ফোর পিস আড়াই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছেলেদের জিন্সের প্যান্ট দেড় হাজার টাকা, চায়না থাই এক হাজার ৬০০ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। টি শার্ট পাওয়া যাচ্ছে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকায়। শাড়ি তিনশ’ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে মিলছে। এ ছাড়াও ছেলেদের পোশাকের দাম প্রকারভেদে ৭৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গোল্ডেন টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্সের কাপড় ব্যবসায়ী আবু তোরাব জানান, ভারতীয় পোশাকের পাশাপাশি আমাদের দেশি পোশাকের পর্যাপ্ত কালেকশন রয়েছে। মেয়েদের গাউন, লাসা, গুজরাটিসহ ক্রেতারা দেশি পোশাক কিনছেন বেশি। বেশি চলছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট, ফতুয়া।
জাহাজ কোম্পানি শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে আসা সামিয়া আক্তার বলেন, এবার অনেক নতুন নতুন কালেকশন এসেছে। গাউন, লাসা, গুজরাটির মধ্যেই পছন্দসই একটা কিনে ফেলব।
সুপারমার্কেটে কথা হয় কেনাকাটা করতে আসা ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার তরুণী রেবেকা পারভীনের সঙ্গে। তিনি জানান, এবার ভারতীয় পোশাকের চেয়ে দেশিগুলোই ভালো লাগছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। একই কথা বললেন নগরীর কেরানীপাড়ার শরিফুল ইসলাম।
এদিকে নগরীর স্টেশন এলাকা, আলমনগর কেজি কাপড় মার্কেট, সাতমাথা, মাহিগঞ্জ, নব্দীগঞ্জ, তাজহাট, নগর মীরগঞ্জ, মডার্ন মোড়, টার্মিনাল, পার্কের মোড়, খামারের মোড়, পায়রা চত্বর, সিটি বাজার এলাকা, কাচারী এলাকা, মেডিকেল মোড়, সিও বাজারসহ অন্য মার্কেটেও ভিড় বেড়েছে। রংপুর বিভাগের ফুটপাতেও জমে উঠেছে ঈদবাজার। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফুটপাতে থাকছে ক্রেতার ভিড়।
এদিকে রমজানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নগরীর বিপণিবিতানগুলোর সামনে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনসহ ১৫টি এলাকার ওপর কড়া নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ তৎপর রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন সড়কের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাটা করে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে, সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বিপণিবিতানগুলোসহ পার্কের মোড়, মডার্ন মোড়, সাতমাথা, সেন্ট্রাল রোড, শালবন ইন্দ্রার মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, সাতমাথা, ধাপ মেডিকেল মোড়, কটকিপাড় মোড়, মুন্সিপাড়া মোড়, কেরামতিয়ার মসজিদ মোড়, হনুমানতলা, পায়রা চত্বরসহ আরও কিছু এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশি নজরদারি রাখা হয়েছে।