সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সোনাতুনি ইউনিয়নে যমুনা নদীর চরে এ বছর পটলের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে শত শত কৃষক পরিবারের মুখে। এক সময় যাদের পেটে দু’বেলা ভাত জুটতো না, পটলের বাম্পার ফলনের কারণে তারা এখন আর অনাহারে থাকে না। তাদের আর ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে না, সবাই থাকছেন টিনের ঘরে।
এই প্রতিবেদকের কথা হয় যমুনা নদীর চরের ধীতপুর গ্রামের আলমাস আলী মন্ডল ও চয়ন ইসলামের সঙ্গে।
তারা বলেন, যমুনার তাণ্ডবে ১০ থেকে ১২ বার তাদের বাড়িঘর ভেঙেছে। প্রতিবারই তারা এক চর ছেড়ে অন্য চরে গিয়ে বসতি গড়েছেন। এতে তারা সর্বস্ব হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। এ বছর ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে অন্যের দেড় বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে পটল চাষ করেছেন। দেড় বিঘা জমিতে পটলের আবাদ খুবই ভাল হয়েছে।
আলমাস আলী মন্ডলের স্ত্রী লিপি খাতুন বলেন, চলতি মাসে প্রায় ১ লাখ টাকার পটল বাজারে বিক্রি করেছি। আরো এক থেকে দেড় লাখ টাকার পটল বিক্রি করতে পারবো। এ ছাড়া জমির পাশে মিষ্টি কুমড়াও চাষ করেছি। এর মধ্যেই প্রায় ২০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়াও বিক্রি হয়েছে।
কৃষক জহুরউদ্দিন, ইউসুফ, রফিকুল জানান, এ বছরই তারা প্রথম পটল চাষ করছেন। প্রথম বছরেই ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি মন পটল তারা পাইকারি ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। লাভ ভাল পাওয়ায় তারা আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে পটল চাষ করার চিন্তাভাবনা করছেন। পটল চাষ করে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হওয়ায় তারা খুব খুশি হয়েছেন।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনজু আলম সরকার পরিবর্তন ডটকমকে জানান, শাহজাদপুরের যমুনার চরের কৈজুরি, সোনাতুনি, গালা ও জালালপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের ৩৫ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা পটল চাষ করেছেন। এর মধ্যে বানতিয়ার, ছোট চানতারা, বড় চানতারা, মাকড়া, শ্রীপুর, জগতলা গ্রামে পটলের বাম্পার ফলন হয়েছে। পটল চাষ করে যমুনা নদীর চর এলাকার হতদরিদ্র কৃষকেরা এখন বেশ স্বচ্ছল।