মরিচ চাষে স্বাবলম্বী চরাঞ্চলের কৃষক

রংপুরে কাউনিয়া, গঙ্গাচড়া ও মিঠাপুকুর উপজেলার চরাঞ্চলে মরিচসহ নানাবিধ রবিশস্য চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষকরা। তিস্তার চরাঞ্চলের মরিচ এখন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হচ্ছে। এ রবিশস্য ক্ষেতেই ব্যস্ত সময় পার করছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা।

বর্তমানে চরাঞ্চলে মরিচ, পিয়াজ, রসুন, বাদাম, ভুট্টা, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, গাজর, আদা, বেগুন, শসা, করলা, ঢেঁড়স, পটল, মিষ্টি আলুসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর, সারাই ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর চরাঞ্চল আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। তিস্তার কড়াল গ্রাসে বাপ-দাদার ভিটামাটি ছেড়ে যাওয়া পরিবারগুলো পুনরায় চরে ফিরে এসব রবিশস্য চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।

কুমারপুর চরাঞ্চলের কৃষক জাহাঙ্গীর কবির জানান, উজান থেকে নেমে আসা পলি জমে তিস্তার চরাঞ্চল এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। আমরা সেই বাপ-দাদার ভিটা মাটিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করে সংসার পরিচালনা করছি। বর্তমানে চরাঞ্চলে নানারকম ফসলের চাষাবাদ খুব ভালো হচ্ছে। অল্প খরচে অধিক লাভ পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আমি ২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। এক সপ্তাহ পরপর আমি ২ বিঘা জমির মরিচ বিক্রি করে ৫-৬ হাজার টাকা আয় করেছি। এছাড়া পিয়াজ, ভুট্টা থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আয় করব। চরাঞ্চলবাসীরা এখন কৃষির ওপর নির্ভরশীল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় কাঁচা তরিতরকারি যথাসময়ে বাজারজাত করা সম্ভব হয় না। ফলে তরিতরকারী নষ্ট হয়ে যায় এবং কৃষকদের বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে কোনো হিমাগার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা না থাকায় ওই সব তরিতরকারি সংরক্ষণ না করে কম দামে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। চরাঞ্চলবাসীর দাবি, যদি স্থানীয়ভাবে একটি হিমাগার নির্মাণ করা হয়। তাহলে বিভিন্ন ফসল গুদামজাত করা সম্ভব হবে। এতে করে কৃষকদের লোকসান গুনতে হবে না।

কাউনিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে ১৫৫ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ হয়েছে। যা গত  বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি।

কৃষি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, তরিতরকারির চাষাবাদে অধিক লাভ। এছাড়া দীর্ঘদিন তরিতরকারি বাজারজাত করে সংসার পরিচালনা করা যায়।

এজন্য চরাঞ্চলের কৃষকরা মরিচসহ নানাবিধ রবিশস্য চাষে ঝুঁকে পড়েছেন । তিনি আরও জানান, বর্তমানে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল রবিশস্য চাষ করায় অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।