নির্মাণ হচ্ছে কমিউনিটি সেন্টার ও ক্লিনিক

উন্নয়ন ও নাগরিকত্ব থেকে ৬৮ বছর ধরে বঞ্চিত লালমনিরহাটের বিলুপ্ত ৫৯ ছিটমহলবাসীর জন্য কমিউনিটি সেন্টার ও ক্লিনিক সেবা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী বিলুপ্ত ১৩৫ নং ছিটমহলে ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক মানের কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি ওই কমিউনিটি সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আগামীকাল রোববার জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাঁশকাটা বিলুপ্ত ছিটমহলে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও বাঁশকাটা বিলুপ্ত ছিটমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করা হবে। একই সঙ্গে আগামী সোমবার হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী এলাকায় বিলুপ্ত ছিটমহলের কোল ঘেঁষে কাদমা ক্লিনিকের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করা হবে।
জানা যায়, ১৬২টি ছিটমহল ছিল দুই প্রতিবেশী দেশে। এর মধ্যে ভারতের ১১১টি ছিটমহল ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। আর বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ছিল ভারতের অভ্যন্তরে। ওইসব ছিটমহলে বসবাসকারী জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫১ হাজার। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ছিটমহলে বসবাসরত লোকসংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ও ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ছিটমহলের লোকসংখ্যা ছিল ১৪ হাজার। ২৪ হাজার ২৬৮ একর ভূমি নিয়ে দুই দেশের ছিটমহল ছিল। তার মধ্যে ভারতের জমির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ১৫৮ একর। বাংলাদেশের ছিটমহলের জমির পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ১১০ একর। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে লালমনিরহাটে ৫৯, পঞ্চগড়ে ৩৬, কুড়িগ্রামে ১২ ও নীলফামারিতে ৪টি ভারতীয় ছিটমহল ছিল। অপর দিকে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের অবস্থান ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এর মধ্যে ৪৭টি কুচবিহার ও ৪টি জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত ছিল।
জানা গেছে, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোকে আরো আধুনিক করতে এবং বর্তমান সরকারের ২০২১ সালে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নতুন করে কমিউনিটি সেন্টার ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সিদ্ধানের আলোকে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গোতামারী বিলুপ্ত ছিটমহলে ক্লিনিক স্থাপন করে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন চলছে ৫৭ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয়ে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের কাজ।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বলেন, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তদারকি করছেন। ইতোমধ্যে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর মৌলিক সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। ২০২১ সালে মধ্য আয়ের দেশ গঠনে বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর আরো উন্নয়ন ঘটবে।