স্থানীয়দের কাছে তার পরিচিতি ক্ষুদে বিজ্ঞানী হিসেবে। নাম মাহবুবুর রহমান শাওন। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ, সেন্সর লাইট, স্মার্ট সুইস, সি-প্লেন তৈরি করে এর আগে তাক লাগিয়েছেন তিনি। এবার বানালেন জ্বালানি ও চালকবিহীন গাড়ি।
শাওনের নতুন আবিষ্কার চালকবিহীন গাড়িটি রোববার (২৯ এপ্রিল) সকালে কুয়াকাটা-কলাপাড়া সড়কে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়। এসময় গাড়িটি দেখতে ভিড় জমান হাজারো উৎসুক জনতা।
উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিনের পুত্র শাওন। ঢাকার একটি কলেজে রোবোটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র তিনি। মেধা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে জ্বালানি সাশ্রয়ী সোলার সিস্টেমের চালকবিহীন গাড়ি তৈরি করে এবার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
শাওন বাংলানিউজকে জানান, গাড়িটি তৈরি করতে প্লাস্টিক বোর্ড, লোহার অ্যাঙ্গেল, প্লাস্টিকের গ্লাস, থাই গ্লাস, পুরনো অটোরিকশার চাকা, সোলার প্যানেল, ব্যাটারি ছাড়াও কিছু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। গাড়িটি চালক ও চালকবিহীন- দু’ভাবে চালানো যাবে। কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রোগ্রাম সেট করে চালকবিহীন চলবে এ গাড়ি, যা তিনি আজ করে দেখিয়েছেন।
সাধারণ ব্যাটারি দিয়ে চালানোয় গতি তেমন একটা ওঠেনি। এখন এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি হলে গতিবেগ আরো বাড়বে।
ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু আবিষ্কার ছিল তার লক্ষ্য। শাওন সিকিউরিটি অ্যালার্ম, মোবাইলের ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ফ্রিজ, সেন্সর লাইট, স্মার্ট সুইস, মোবাইল সুইস, মোবাইলের মাধ্যমে সুইস অন অফ সিস্টেম আবিষ্কার করেছিলেন।
২০১৫ সালে সি-প্লেন তৈরি করে পরীক্ষামূলক নদীতে চালিয়েছিলেন শাওন। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলে শাওন তার আবিষ্কৃত গাড়ি ও ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা সম্ভব বলে দাবি তার।
শাওন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা হিসেবে বেছে নেই ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি। সেই খেলাধুলা থেকেই আবিষ্কারের প্রতি ঝোঁক। বাবা-মা সব সময় নানাভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন।
শাওনের নতুন নতুন আবিষ্কার সবাইকে অবাক করে দেওয়ার মতো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মোয়াজ্জেমপুরের বাসিন্দা আক্কাস।
ছুটি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, চালকবিহীন গাড়ি আবার মহাসড়কে! আসলেই অবিশ্বাস্য! প্রত্যন্ত গ্রামে এরকম আবিষ্কার কল্পনা করা যায়না। আজ নিজের চোখে তা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
শাওনের বাবা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, শাওন ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার চেয়ে নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করতো। তার খেলাধুলার অংশই ছিল আবিষ্কার। ছেলের এমন আগ্রহ দেখে তাকে বাধা না দিয়ে যখন যা চেয়েছে তাই কিনে দিয়েছি।