আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের যানজট নিরসনে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় ‘ভুলতা ৪ লেনবিশিষ্ট ফ্লাইওভার’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। ২৪০ কোটি ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২০৮ মিটার দৈর্ঘের এই ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। এই ফ্লাইওভারটি বাস্ত্মবায়ন হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া এবং গোলাকান্দাইল এলাকায় কোনো যানজট থাকবে না বলে মনে করছেন সংশিস্নষ্ট প্রকৌশলীরা এবং দ্রম্নত ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল যানবাহন ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে ভুলতা বাজার অতিক্রম করতে পারবে এবং সিলেট থেকেও দ্রম্নত ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আলীউল হোসেন বলেন, ফ্লাইওভারের পিলার, গার্ডার, গ্যাংরোড, ড্রেনেজ, পাইলিং, পার্কওয়ের কাজ প্রায় শেষ। ১ দশমিক ২৩৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই উড়াল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ২৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকা বাইপাস ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল অংশে ব্যয় হবে ১১২ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কাজে ব্যয় হবে ৭ কোটি টাকা। প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ হোসেন বলেন, উড়াল সেতুর ৬৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে প্রায় একশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর রূপগঞ্জের মুড়াপাড়ায় সেতু নির্মাণের কাজ ৮৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ের মানুষের ভ্রাতৃত্ব বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। সেতু নির্মাণে দীর্ঘদিনের অবহেলিত এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটে উঠছে। ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প-কারখানার মালামাল পরিবহনে সময় ও ব্যয় কমে আসবে। তাতে কারখানার শ্রমিক, কর্মচারী, মালিক ও এলাকাবাসী লাভবান হবে। এ ছাড়া ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়ক ও রূপসী-মুড়াপাড়া-কাঞ্চন সড়ক প্রশস্ত্ম করায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে রূপগঞ্জ এখন মাইলফলক। ডেমরা-নগরপাড়া-কামশাইর গাজী বাইপাস সড়কে ওই অঞ্চলের ১৭ গ্রামের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন শুরম্ন হয়েছে। তারাবো পৌরসভায় সড়ক ও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে ২৮ কোটি ৩২ লক্ষাধিক টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মুড়াপাড়া বাজারে মুক্তিযোদ্ধা কমপেস্নক্স নির্মাণ, রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ, মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও মুড়াপাড়া পাইলট হাইস্কুল সরকারিকরণ, গাজী অডিটোরিয়াম নির্মাণ, উপজেলা পরিষদ কমপেস্নক্স নির্মাণ এবং উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে গ্রামীণ অবকাঠামোর নজিরবিহীন উন্নয়নে দেশের দৃষ্টান্ত্ম এখন রূপগঞ্জ উপজেলা। রূপগঞ্জে বরাদ্দকৃত টিআর এবং কাবিখা কর্মসূচির আওতায় ব্যাপক গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। উপজেলায় সোলার প্যানেল স্থাপন এবং স্থাপনা ও রাস্ত্মাঘাটের সংস্কারসহ উন্নয়ন কাজে বরাদ্দকৃত সকল অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। স্থানীয় এমপি গোলাম দস্ত্মগীর গাজী (বীরপ্রতীক) প্রকল্পগুলো সমন্বয় ও বাস্ত্মবায়ন করে চলছেন। বরাদ্দকৃত অর্থের কার্যকর ব্যবহারের ফলে গ্রামের প্রত্যন্ত্ম অঞ্চলেও লেগেছে উন্নয়নের নজরকাড়া ছোঁয়া। টিআর-কাবিটা প্রকল্পের ফলে পাল্টে যাওয়া রূপগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ চিত্রের কথা স্বীকার করছেন উপজেলার সুবিধাভোগী সাধারণ জনগণ।
এদিকে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোলস্না বলেন, উন্নয়নের ও অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে আওয়ামী লীগকে আরও একবার নির্বাচিত করতে হবে। রূপগঞ্জের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ সরকারের আমলে প্রায় ৩২শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী এহসানুল হক বলেন, উপজেলার এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে সড়কে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্ত্মগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, রূপগঞ্জবাসীর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নই আমার লক্ষ্য। এখানকার চিহ্নিত সমস্যাগুলো ধারাবাহিক সমাধান করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময় ৩২শ’ কোটি টাকার উন্নয়নের ফলে বদলে গেছে রূপগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত্ম গ্রাম অঞ্চলের চিত্র।