অনলাইন ব্যবসায় নারীর সফলতা

দেশের অসংখ্য নারী ইতিমধ্যে অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। অন্যান্য ব্যবসার মতো এ ব্যবসাতেও সফলতা হাতছানি দিচ্ছে এসব নারীকে। কারণ হিসেবে অনেক অনলাইনে ব্যবসা করা নারী বলছে, দেশে অনলাইনে ব্যবসা চালু হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই মানুষকে কষ্ট করে মার্কেটে যেতে হচ্ছে না। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নারীরাও অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের অসংখ্য নারী যুক্ত হয়েছেন অনলাইন ব্যবসায়। সাধারণ ব্যবসার মতো এখানেও সফলতা লাভ করছেন তারা। অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে, রূপাঞ্জল ফ্যাশনের মালিক নাসরিন সুলতানা পিংকি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে জীবন-জীবিকার জন্য নারীদের এখন অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণ নেই। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য, সঠিক পরিকল্পনা আর মেধা থাকলে এখন নারীরা ঘরে বসেই অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে সহজেই সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। এমনকি হতে পারেন সফল একজন উদ্যোক্তাও। দেশের অসংখ্য নারী এখন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সফলতা লাভ করছেন।
আরেক নারী উদ্যোক্তা আলমিরা জানান, অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ক্রেতার কাছ থেকে বিশ্বস্ত্মতা অর্জন করা, যা অনেকটাই কঠিন। তবে সেটা খুব ভালোভাবেই করছে নারীরা।

বর্তমান যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত্ম দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র আজ প্রযুক্তিনির্ভর এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ঘরের নারীরা। নিত্যনতুন পন্থায় এই প্রযুক্তির কল্যাণেই তারা তৈরি করে নিচ্ছেন তাদের নিজস্ব অবস্থান। অনলাইন ফ্যাশন হাউস, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধারণাটি নতুন হলেও বর্তমানে ফেসবুক, টুইটারের মাধ্যমে মানুষের কাছে এর জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। সময়ের অভাব, পছন্দসই ডিজাইনের সামগ্রী না পাওয়া কিংবা যানজটের ভোগান্ত্মির কারণে শপিংমলে গিয়ে কেনাকাটায় অনাগ্রহী ক্রেতাদের বিভিন্ন সুবিধার কথা চিন্ত্মা করে অনলাইনের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে এসব ব্যবসায়িক কর্মকা-। অনলাইন ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ কর্ণধারই নারী। এ ধরনের ব্যবসায় জড়িত থেকে নারীরা ঘরে বসেই যেমনি উপার্জনের সুযোগ পাচ্ছেন, তেমনি বিভিন্ন বয়সী নারী পুরম্নষকে কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন। নীলিম সরকার এমনই একজন অনলাইন উদ্যোক্তা। নীলিম বলেন, আমার বাবা আমাদের দুই ভাইবোনকে এই ব্যবসায় পুঁজি হিসেবে দুই লাখ টাকা দেন। এই পুঁজি নিয়েই দুই বছর ধরে আমরা অনলাইনে বিভিন্ন জুয়েলারি, ব্যাগ, মেয়েদের শাড়ি, সালোয়ার কামিজ বিক্রি করে আসছি। আমাদের কাজের মান, স্বচ্ছতা, সেবায় সন্তুষ্ট আমার ক্রেতারা। আমাদের বেশ কিছু রেগুলার কাস্টমার আছেন, যারা আমার অনলাইন থেকেই শপিং করেন। তাদের চাহিদামতো পণ্য সরবরাহ করতে পারি বলেই তারা আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের অসংখ্য নারী ইতিমধ্যে অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে অন্যান্য ব্যবসার মতো এ ব্যবসাতেও সফলতা হাতছানি দিচ্ছে এসব নারীর। কারণ হিসেবে অনেক অনলাইনে ব্যবসা করা নারীরা বলছে, দেশে অনলাইনে ব্যবসা চালু হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই জনগণকে কষ্ট করে মার্কেটে যেতে হচ্ছে না। বরং জনগণ বা ক্রেতা এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে তার পছন্দের জিনিসটি অর্ডার দিয়ে দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে কিনতে পারছেন। আবার এক্ষেত্রে বিল পরিশোধও অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই করতে পারছেন। ফলে কোনো ঝামেলা না থাকায় অনলাইন ব্যবসা মানুষের জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও সহজ করে তুলছে।
অনলাইন ব্যবসা প্রসঙ্গে অনলাইন শপের কর্ণধার শারমিন আক্তার জানান, তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে জীবন-জীবিকার জন্য নারীদের এখন অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কোনো কারণ নেই। দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি, ধৈর্য, সঠিক পরিকল্পনা আর মেধা থাকলে এখন নারীরা ঘরে বসেই অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে সহজেই সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। এমনকি হতে পারেন সফল উদ্যোক্তাও। দেশের অসংখ্য নারী অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সফলতা লাভ করছেন।
অনলাইন ব্যবসায়ীরা তাদের অনলাইন শপের জন্য নানা ধরনের শাড়ি-কাপড়, পোশাক-পরিচ্ছদ, খেলনা, প্রসাধনী, আর্টিফিসিয়াল গহনাসহ নানা জিনিস মূল্য, ভ্যাট ও কাস্টম চার্জ অনলাইনের মাধ্যমে পরিশোধ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নিয়ে আসেন। এরপর ওইসব জিনিসপত্রের ছবি তাদের এ অনলাইন শপের ওয়ালে পোস্ট করেও ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপর ক্রেতারা তার অনলাইন শপ থেকে ছবি দেখে পছন্দের ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাছাই করেন। এরপর বাছাইকৃত জিনিসপত্র কেনার জন্য অনলাইনের মাধ্যমেই অর্ডার করেন। এরপর অর্ডার অনুযায়ী তিনি ক্রেতাদের কাছে জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন এসব ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বা বিষয় হচ্ছে ক্রেতার বিশ্বস্ত্মতা অর্জন করা, যা অনেকটাই কঠিন। তবে একবার বিশ্বস্ত্মতা অর্জন করলে পরবর্তীতে সমস্যা হয় না।